মোঃ মাছুম আহমদ (মৌলভীবাজার):
মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আরমান (২২) নামে এক যুবককে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ড কে কেন্দ্র করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে একটি কুচক্রী মহল।
জানা গেছে, নিহত আরমান উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের গরেরগাঁও গ্রামের প্রবাসী সুমন আহমদের ছেলে। ঘটনাটি শনিবার (২২ জুন) গভীর রাতে গরেরগাঁও গ্রামে ঘটেছে। এ ঘটনায় একই গ্রামের তৈমুছ আলীর ছেলে রফিক মিয়া (৪২) গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। রবিবার (২৩ জুন) নিহত আরমানের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে গরের গাঁও জামে মসজিদে জানাজার পর দাফন করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে জুড়ী থানা পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হলেন একই গ্রামের মৃত চান মিয়ার ছেলে ইয়াজ মিয়া (৫০), তার দুই ছেলে তানভীর আহমেদ (২৫) ও তুহিন আহমেদ (১৬) এবং মৃত চেরাগ আলীর ছেলে তাজ উদ্দিন (৫৫)।
শনিবার (২২জুন) গভীর রাতে গরেরগাঁও গ্রামের রফিক মিয়ার উপর হামলা করে তানভীর। এ সময় সে আরমানকে ঘর থেকে ডেকে এনে বুকে বেশ কয়েকবার ছুরিকাঘাত করে। ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই আরমানের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরমান’কে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত রফিক মিয়াকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
বুধবার (২৬ জুন) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রফিক মিয়া জানান, তিনি একজন সিএনজি চালক। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন সিএনজি চালিয়ে বাড়ীতে আসছিলেন। আগে থেকেই উৎপেতে থাকা তানভীর ও তার সহযোগিরা উপস্হিতি টের পেয়ে পথ রোধ করে দাড়ায় এবং তার কাছে টাকা দাবী করে। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করতে থাকে। তখন রফিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তার ভায়রা ভাই সুমন আহমদের ছেলে আরমানকে ঘর ডেকে বের করে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়।
সরজমিনে আরমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাড়িতে এখনোও চলছে শোকের মাতম। বারবার শোকে আরমানের মা ও দাদী মূর্ছা যাচ্ছিলেন। এ সময় পুত্র শোকে কাতর আরমানের মা বলেন, সন্ত্রাসী তানভীর ও তার সহযোগিরা আমার ছেলেকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আরমানের দাদী সোনারা বেগম বলেন, তানভীর ও তার সহযোগিরা আমার নাতিকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে খুন করেছে। আমি হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, এক সাংবাদিক খুনিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। সে খুনিদের বাড়ীতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছে। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করে আমি তার মুখোশ উন্মোচন করব।
জানা গেছে, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক ওই সাংবাদিক এ হত্যাকান্ডকে কেন্দ্র করে খুনিদের বাঁচাতে অপর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
জুড়ী থানার অফিসার (ওসি) এসএম মাইন উদ্দিন বলেন, খুনের ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।