মো: সোহরাওয়ার্দী হোসেন
ভাম্যমান প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে
আরকান্দি পর্যন্ত যমুনা নদীর প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গত ২ সপ্তাহ
ধরে ব্যাপক ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে। এই ভাঙ্গণের তান্ডবে এ পর্যন্ত অর্ধশতাধীক
বাড়িঘর ও বহু গাছপালা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ভাঙ্গণের তান্ডবে
গৃহহারা হয়ে শত শত মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। অনেকে আবার খোলা স্থানে ছাপড়া
তুলে বাসকরছে ও মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদিকে গত কয়েকদিন ধরে সিরাজগঞ্জ
পানি উন্নয়ন বোর্ড এ ভাঙ্গণ এলাকায় বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেছে।
কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন ধীরগতিতে কাজ করায় তা কোনো কাজেই আসছে না। যে সব
স্থানে বস্তা ফেলা হচ্ছে দুই দিন না যেতেই সেখানে আবার ভাঙ্গণ দেখা
দিচ্ছে। এলাকাবাসির অভিযোগ ভাঙ্গণ এলাকার ৫০ /১০০ গজ দূরে ড্রেজার বসিয়ে
বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে বস্তা ফেলার কয়েকদিন না যেতেই ওই এলাকায়
ভাঙ্গণ দেখা দিচ্ছে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট হলেও ভাঙ্গণ রোধ
হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণগ্রামের নাজমা খাতুন আব্দুল কাদের,ইয়াহিয়া,জহুরুল
ইসলাম,এমদাদুল হক মিলন,আরকান্দি গ্রামের মেহেদী হাসান, হালিমা খাতুন ও
রেমান সরকার বলেন, শুষ্কমৌসুমে বস্তা ফেলার কাজ না করে পানি বৃদ্ধি শুরু
হয়ে যখন ব্যাপক ভাঙ্গণ শুরু হয়েছে, তখন ঠিকাদারের লোকজন ধীরগতিতে ২/৪
নৌকা বস্তা ফেলে চলে যায়। ২/৩ না যেতেই তা আবার ভেঙ্গে যমুনায় বিলিন হয়ে
যায়। ফলে এ বস্তা ফেলা কোনো কাজেই আসছে না। অপরদিকে ঠিকাদারকে বালু
সরবরাহের নামে এলাকার প্রভাবশালীরা প্রতিদিন ১৫/২০টি ট্রলারে করে বালু
বিক্রি করায় এ ভাঙ্গণের তান্ডব আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
এ বিষয়ে বালু সরবরাহকারী খোরশেদ আলম,জয়নাল সরকার ও ফজলু ব্যাপারী
এলাকাবাসির অি যোগ অস্বীকার করে বলেন, ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে
অন্যত্র বিক্রির করা হচ্ছে না। ঠিকাদারের লোকজন বালু উত্তোলন করে তা
বস্তায় ভরে ভাঙ্গণস্থানে ফেলছে। আমরা শুধু তাদের কাজে সহযোগিতা করছি।
একটি কুচক্রিমহল ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাদের নামে মিথ্যা অপপ্রচার করছে।
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা
হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন বলেন,এ
ভাঙ্গণরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেছে। অচিরেই এ
সমস্যা আর থাকবে না।
ভাঙ্গণ এলাকার অদূরে যমুনা নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে
অন্যত্র বিক্রির বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার(ভূমি) লিয়াকত
সালমান বলেন,এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে খুকনি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবকে
নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর
রহমানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে ফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া
যায়নি।