সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরে পরীক্ষামূলক চিনা বাদাম চাষ করে সফল হয়েছেন দুলাল-বিথি দম্পতি। তিন মাস আগে লাগানো বাদাম এখন ঘরে তুলছেন তারা। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) উপজেলা সদরের উপজেলা কমপ্লেক্সের ২নং গেট রেইন্ট্রিতলার পশ্চিমে আত্রাই নদীর তীরে লাগানো বাদাম ক্ষেত থেকে বাদাম তুলছিলেন এই দম্পতি। সেখানেই কথা হলো তাদের সাথে। এই উপজেলায় সাধারণত: কেউ বাদামের চাষ করেন না। চাষি দুলাল হোসেন জানান, মান্দা উপজেলায় তার এক আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গিয়ে সেখানে বাদামের চাষ করা দেখেন। এ থেকে উৎসাহীত হয়ে তিনি নাটোর থেকে ৮ কেজি উন্নত জাতের চিনা বাদামের বীজ কিনে আনেন। বিভিন্নভাবে কাজ করে সে বীজ থেকে চারাগাছ তৈরি করেন। এরপর রোপণ করেন নদী তীরের এই এক বিঘা জমিতে। নিয়মিত পরিচর্যায় অল্পদিনেই পুরো মাঠ বাদাম গাছে ভরে ওঠে। মাঝে মাঝে মাটি খুঁড়ে দেখেন বাদাম ধরেছে কিনা। প্রথম চাষ হলেও গাছের গোড়ায় গোড়ায় দেখা দেয় প্রচুর বাদাম। আর অল্পদিন পরেই পুরোপুরি পেকে যেত। কিন্তু বর্ষা শুরু হয় ইতিমধ্যেই। গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণে এই উঁচু জমিতেও পানি জমে যায়। এ অবস্থা চলতে থাকলে ক্ষেতেই পচন ধরবে। তাই আগুড় বাদাম তুলতে শুরু করেন তারা। বাদাম তোলার কাজ করছিলেন দুজনেই। দুলাল হোসেন কাদাপানিতে সয়লাব ক্ষেত থেকে বাদামের গাছ টেনে উপড়িয়ে তুলে জমা করছিলেন ক্ষেতেরই এক কোণে। আর তার স্ত্রী জান্নাতুন ফেরদৌস বিথি সেগুলোর গোড়া থেকে থরে থরে ধরে থাকা বাদাম খুলে খুলে রাখছিলেন। বিথি জানালেন, শুরু থেকে তারা দুজনেই কাজ করেছেন এই বাদাম ক্ষেতে। সে এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিছন তৈরি, জমি চাষ, জমিতে উঁচু উঁচু সুলি তৈরি, বাদাম গাছ লাগানো সব কিছুই করেছেন দুজনেই। নতুন ফসল জন্য খুব উৎসাহ নিয়ে কাজ করেছেন তারা। তবে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বাদাম তুলতে কয়েকজন নারী শ্রমিক নিয়েছিলেন। তারা একদিন কাজ করেছেন। কিন্তু তারা দুজনে যে দরদ দিয়ে কাজ করেন অন্য শ্রমিকেরা তা করেন না। তাই আবার দুজনেই শুরু করেছেন। দিন শেষে কাদায় মাখা নতুন কাঁচা বাদামগুলো ডালিতে করে নিয়ে নদীর পানিতে পরিস্কার করেন। ডালিভর্তি চকচকে নতুন বাদাম দেখে মন ভরে যায় চাষি দম্পতির। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোমরেজ আলী জানান, মহাদেবপুর উপজেলায় তেমন বাদামের চাষ হয়না। চাষি দুলাল হোসেন শখ করে এর চাষ করেছেন। তাকে সার্বিক সহযোগীতা দেয়া হয়েছে। এই এলাকার জমি খুবই উর্বর ও বাদাম চাষের উপযোগী। চাষিরা আগ্রহী হলে সব রকম সহযোগীতা দেয়া হবে। স্থানীয়রা জানান, এই অর্থকরি ফসল আবাদে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন।#