আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষমতায় অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির রাজত্বে বলির পাঠাতে অস্ত্রের ছড়াছড়ি
এসএম রুবেল ক্রাইম রিপোর্টার রাজশাহী ব্যুরোঃ
আওয়ামী থাকাকালীন শত কোটি টাকার মালিক অস্ত্রের ছড়াছড়ি লিডে অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলির স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে আলোচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ নীরাবতাই ভাগবাটোয়ারা জেলার সাংসদ সদস্যরা তার বিরুদ্ধে ৮ মাসে ৭ কারণ দর্শানো নোটিশ ও ৩ অভিযোগ!অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় একজন পেশাদার শিক্ষক হিসেবে পরিচিত ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা প্রভাষক জোনাব আলীকে ৮ মাসে ৭ কারণ দর্শানো নোটিশ ও ৩টি মিথ্যা ও অমূলক অভিযোগ দিয়ে হয়রাণী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে সরেজমিনে গিয়ে তা বেরিয়ে এসেছে স্বৈরাচারী আওয়ামী নেতা অধ্যক্ষ মোঃ এজাবুল হকের বিরুদ্ধে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক বরাবর এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দিয়েছেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজ এর বাংলা বিষয়ের প্রভাষক মোহাঃ জোনাব আলী। তিনি তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে মে ২০২৪ পর্যন্ত ৮ মাসে হয়রাণী ও মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যে তুচ্ছ ও অমূলক বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষ তাকে ৭টি কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করেছেন। একই সময়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর আরো ৩টি মিথ্যা অভিযোগও দায়ের করেছেন অধ্যক্ষ।
অভিযোগে উল্লেখ আছে, অধ্যক্ষ এজাবুল হক গত ২০২৩ এর মার্চ থেকে ২০২৪ এর মার্চ পর্যন্ত ৪ বার তার একাধিক মাসের বেতন বন্ধ করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক দু’বার এবং শেষবার ৩ মাস বন্ধ রাখায় মহাপরিচালকের দপ্তরের হস্তক্ষেপে গত ২৭ মার্চ তার ৩ মাসের বেতন ফরোয়ার্ড করেন অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি (মাফিয়া)
বক্তব্যে জোনাব আলীর অভিযোগে বলা হয়েছে, তাকে কয়েক বছর থেকে কয়েকদিনও নৈমিত্তিক ছুটি দেয়া হয়না। অথচ অধিকাংশ শিক্ষককে বছরে ২০ দিন ছাড়াও বিশেষ ক্ষমতাবলে ছুটি দিয়ে পরে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নিতেন। তিনি কলেজে উপস্থিত থাকার পরও এবং ৩ দিন নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করে পরে সেই খাতায় দেয়া নৈমিত্তিক সীলকে ফ্লুইড দিয়ে মুছে তাতে অনুপস্থিত সীল দিয়ে শোকজ নোটিশ দিয়েছেন। কয়েকবার সরকারি প্রশিক্ষণের চিঠি আসলেও তাকে ছাড়পত্র/অনুমতি দেননি অধ্যক্ষ এজাবুল হক। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, অদ্যবধি তার মূল যোগদান পত্র, আর্টিকেল ৪৭ সহ বিভিন্ন কাগজ-পত্র আটকিয়ে রেখেছেন। বিশেষ বিশেষ সময়ে চাঁদাবাজি করার কৌশল হিসেবে অবৈধভাবেই তারসহ অন্য শিক্ষকদেরও এসব কাগজ আটকিয়ে রেখেছেন অধ্যক্ষ। কলেজ সরকারি হওয়ায় তারসহ ৩ জন শিক্ষকের বেসরকারি আমলের জমা রাখা অবসর ভাতার ফাইল এখন পর্যন্ত স্বাক্ষর করেননি। ২০২১ ও ২০২২ এর এসিআর-এ তাকেসহ কয়েকজনকে ৬৯ নম্বর দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। অন্যান্য শিক্ষকদের দিলেও কলেজের ২০২১ এর পর থেকে অনুষ্ঠিত প্রায় ৬/৭টি আন্তপরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালনের কোন প্রকার সম্মানী অদ্যবধি তাকে দেননি। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, তিনি একজন দায়িত্ব পরায়ণ, নিষ্ঠাবান ও সচেতন শিক্ষক হিসেবে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অত্যন্ত সুপরিচিত। তিনি স্বজ্ঞানে, সুস্থ শরীরে কখনো একটি ক্লাস মিস করেননি। প্রতি বছর ফাইনালে তার বাংলা বিষয়ে পাসের হার ৯৪-৯৭ ভাগ। অথচ তাকে বিভিন্ন প্রকার হয়রানী ও মানসিক নির্যাতনে আতঙ্কিত, বিচলিত করে অসুস্থ করে তুলেছেন অধ্যক্ষ এজাবুল হক। তার বিরুদ্ধে মুখ খুললে দেশীয় ক্যাডার দ্বারা অস্ত্র মাথায় ঠেকিয়ে মারধরের প্রমাণ মিলেছে কেডারো মাফিয়া ইজাবুল হক বুলির রাজত্ব বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের ভিতরে।
এদিকে চলতি বছর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে তিনি উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক পদে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের আবেদন জমা দিলেও বিভিন্ন অজুহাতে অধ্যক্ষ তাকে পান্ডুলিপি/ফাইলে স্বাক্ষর না দিয়ে মানসিকভাবে অপমান ও হয়রাণী করে বঞ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে জোনাব আলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনও করেছিলেন।
আওয়ামীলীগের বিশাল নেতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে অধ্যক্ষ এজাবুল হক প্রায়ই তাকে বিএনপি বলে চাকুরী খেয়ে নিব বলে হুমকী দিয়ে থাকেন। অধ্যক্ষ এমন কথাও বলেন যে, ‘আমি যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারি, ১৭ জন সচিবসহ বাংলাদেশের সমস্ত প্রশাসন আমার হাতের মুঠোই।’ অধ্যক্ষের এসব অত্যাচারে বাধ্য হয়ে গত ৪ আগস্ট রোববার তিনি মহাপরিচালক বরাবর একটি আবেদন দিয়েছেন। আবেদনের কপি রাজশাহী আঞ্চলিক অফিস প্রধান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসককেও দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য যে, মোহাঃ জোনাব আলী জেলার একজন স্বনামধন্য শিক্ষক,ও নেতিবাচক কলম যোদ্ধা সাংবাদিক" তার সৃজনশীল লেখক হিসেবে পরিচিত তিনি। ছাত্রজীবন থেকে বর্তমান পর্যন্ত সরকারি-বেসরাকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বেশ কিছু সম্মাননা ও সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেছেন। তিনি ২০২৩-এ জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে সদর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক সম্মাননা অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বিটিভির তালিকাভুক্ত গীতিকার এবং নাট্যকার। জেলার অন্যতম সাপ্তাহিক সোনামসজিদ পত্রিকার তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা প্রকাশক ও সম্পাদক। তিনি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সামাজিক ও রাষ্ট্রিক উন্নয়নমূলক কয়েক শ’মৌলিক গবেষণা বিষয়ক প্রবন্ধ লিখেছেন। তার লেখা ২টি প্রবন্ধের বই ও ১টি গানের বই প্রকাশিত হয়েছে। এমন একজন পেশাদার শিক্ষক হয়েও তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেয়ায় তিনি প্রতিকার চেয়ে দেয়া আবেদনে আরো উল্লেখ করেছেন যে, অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি নিজেই তার চাকরী জীবনে কখনো কোন ক্লাস নেননি। টাকার পিছনে বিভিন্ন সিন্ডিকেট নিয়ে তার জীবনযাত্রা চাকরি দেওয়ার নাম করে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে কোটির টাকার উপর আত্মসাৎ এসবের তথ্য প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে তার বিরুদ্ধে একাধিকবার প্রকাশিত হয়েছে একাধিকবার পএপত্রিকায়। ফলে পেশাদার শিক্ষকের মর্যাদা ও সম্মান সম্পর্কে অধ্যক্ষের কোন সহমর্মিতা লক্ষ্য করা যায়না। তিনি বিষয়গুলো তদন্ত সাপেক্ষে তার পেশাগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে তাকে একজন শিক্ষক ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সাংস্কৃতিক ব্যক্তি হিসেবে স্বাচ্ছন্দে দায়িত্ব পালন করাসহ অন্যান্য শিক্ষকদেরও সকল প্রকার মানসিক হয়রানী ও দুশ্চিন্তা দূর করে কলেজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি, পরিচালনা ও উন্নয়নে সুব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহাপরিচালকের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন ঔ কলেজের শিক্ষকরা।বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বে অধ্যক্ষ এজাবুল হকের বিরুদ্ধে কলেজে বিভিন্ন অনিয়ম বিষয়ে দৈনিক মানবজমিন, দৈনিক সমকাল, দৈনিক শিক্ষা ডটকমসহ প্রায় ৮/৯টি পত্রিকা ও কয়েকটি অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ৩ জন মহিলা শিক্ষকও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার এক মহিলা শিক্ষকের অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক এর দপ্তরে জমা দিলেও অজ্ঞাত কারণে তদন্ত প্রতিবেদেনটি ফাইলেই বন্দি হয়ে আছে বলে কলেজের একটি সূত্র দাবি করেছে।
এসএম রুবেল ক্রাইম রিপোর্টার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে। মোবাইল নম্বর- ০১৭৫৬৯১১৯৪৬ তাং- ১৪-৮-২০২৪ সরেজমিন প্রতিবেদন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সেলিম খান, নির্বাহী সম্পাদকঃ শেখ রবিউল ইসলাম আজম। যোগাযোগঃ ০১৮১১-২০২৫৩৩
বিঃদ্রঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি নিজস্ব একাউন্ট থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে, যে-কনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।