সরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের এফআরসিএস, এমআরসিপি ও এমআরসিএসসহ অন্যান্য কোর্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বিদেশ ভ্রমণের জন্য আবেদন না করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে ‘অদৃশ্য’ ক্ষোভে ফুঁসছে দেশের চিকিৎসক সমাজ। দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক এমনকি চিকিৎসক নেতারাও এমন সিদ্ধান্তে সমালোচনামুখর। তারা বলছেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত উচ্চশিক্ষার রুদ্ধ করেছে, এর মাধ্যমে চিকিৎসকদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
গত মার্চ মাসে দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চিকিৎসকদের উচ্চশিক্ষা নিতে বিদেশ ভ্রমণের জন্য আবেদন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। নির্দেশনায় বলা হয়, বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সরকারি চিকিৎসকরা এফআরসিএস, এমআরসিপি ও এমআরসিএসসহ অন্যান্য কোর্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বিদেশ ভ্রমণের জন্য আবেদন করেছেন কিন্তু অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী এ ধরনের আবেদন অনুমোদনের সুযোগ নেই।
মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অর্থ বিভাগ থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এফআরসিএস, এমআরসিপি ও এমআরসিএসসহ অন্যান্য কোর্সের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে অগ্রায়ন না করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে এলে দেশের জনগণই সুফল ভোগ করবে : বিডিএফ
বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের (বিডিএফ) চেয়ারম্যান ডা. মো. শাহেদ রাফি পাভেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিদেশ থেকে ডিগ্রি নিয়ে যখন একজন চিকিৎসক দেশে ফিরে আসবেন তখন দেশের জনগণই সুফল ভোগ করবে। বিডিএফ মনে করে, তাদের এই উচ্চতর ডিগ্রির পথ রুদ্ধ করা কোনোক্রমেই ভালো সিদ্ধান্ত নয়। এর মাধ্যমে চিকিৎসকদের প্রতি খুবই অন্যায় করা হয়েছে। আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানাব যে, এই প্রজ্ঞাপন যেন অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, রয়েল কলেজ থেকে ডিগ্রি নিতে বাংলাদেশ থেকে যে চিকিৎসকরা যায়, এরা সবাই নিজ অর্থায়নে পড়াশোনা করে। তারা কিন্তু সরকারি অর্থায়নে পড়াশোনা করে না। রয়েল কলেজের যে ডিগ্রি, সেটি সারা বিশ্বেই অ্যাক্রেডেট। অর্থাৎ আপনি যে দেশেই যান না কেন, এই ডিগ্রির একটা ভ্যালু আছে। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই তো আমাদের চিকিৎসকরা চাইবে আন্তর্জাতিক মানের একটা ডিগ্রি অর্জন করতে। এটাতে আমাদের কেন বাধা দিতে হবে? এতে করে তো তাদের স্কিলড (দক্ষতা) অর্জন হবে।
বিডিএফ চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের ভাবতে হবে যে, শতকরা কত শতাংশ চিকিৎসক রয়েল কলেজে ডিগ্রির জন্য যেতে পারে? এছাড়া এখানে কোয়ালিটিরও একটা ব্যাপার আছে। যেকোনো চিকিৎসক চাইলেই তো রয়েল কলেজে ডিগ্রি নিতে যেতে পারবে না। এক্ষেত্রে যেসব চিকিৎসক নিজ যোগ্যতা বলে এই প্রতিষ্ঠানটিতে ডিগ্রি নিতে যায়, সেই সংখ্যাটি তো অনেক কম। তাহলে এই কয়জন মেধাবী ছেলেকে কেন আটকাবেন?