আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, বিভাগীয় ব্যুরো চিফ, চট্টগ্রামঃ বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ভুক্তভোগী ভিকটিম ২১ বছর বয়সের এবং রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি এলাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উর্ত্তীণ হয়। গত ১৫ জুলাই ২০২২ইং তারিখে রাত আনুমান ০৯০০ ঘটিকায় পূর্ব পরিচয় ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামী বিপ্লব বড়ুয়া ভিকটিমের সাথে জরুরী আলাপ আছে বলে বাড়ির বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম আর ঘরে ফিরে না আসায় ভিকটিমের মা আশে-পাশে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ১৬ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ ভোর বেলায় ভিকটিম বাড়িতে এসে জানায় আসামী বিপ্লব বড়ুয়া তাকে বাড়ির বাহিরে ডেকে নেওয়ার পর আসামী যিশু চৌধুরী সহ কতিপয় দুস্কৃতিকারী তার মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক বাঘাইছড়ি থানাধীন বাড়–য়ার পাড়ায় একটি বসত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সকল আসামীগন সারারাত ব্যাপি ভিকটিমকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক গণধর্ষণ করে।উল্লেখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানায় ০৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০১ তারিখঃ-০৫ আগস্ট ২০২২ খ্রিঃ ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/ ২০০৩)এর ৯(৩)/৩০ রুজু হয়।
পরবর্তীতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় বাঘাইছড়ি থানার চাঞ্চল্যকর ২১ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ মামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী চাকমাদের সাথে ঐখানকার সংখ্যালঘু বড়ুয়া, হিন্দু ও মুসলিমদের দ্বন্ধ চরম আকার ধারণ করে এবং এক পর্যায়ে গোলাগুলির পর্যায়ে যায়। এজাহার নামীয় ০৫ জন আসামীর মধ্যে ০২ জন বৌদ্ধ, ০১ জন হিন্দু ও ০২ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক ছিল। ০৫ জন আসামীই একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। উক্ত ঘটনায় ইউপিডিএফ গ্রুপ ৫ অভিযুক্তকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টাও করেছিল। সেনাবাহিনী এই সংঘাত এড়ানোর জন্য দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনাও করেছে। কিন্তু আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় সমাধান হচ্ছিল না। বর্ণিত আসামীরা এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল।মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও চাঞ্চল্যকর হওয়ায়, মামলা রুজুর পর থেকে মামলার এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষে র্যাব-০৭ চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, উক্ত ধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং আসামী যীশু চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন রাজাপুর লেইন আন্দরকিল্লা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০৭ অক্টোবর ২০২২ইং তারিখ আনুমানিক ০৫৩০ ঘটিকায় বর্ণিত এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করে আসামী যিশু চৌধুরী(২৭), পিতা-সমীর চৌধুরী, সাং-করেঙ্গাতলী বাজার, থানা-বাঘাইছড়ি, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামী এবং তারা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গণধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করে। উল্লেখ্য, উক্ত গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের ফলে পাহাড়ী চাকমা এবং সংখ্যালঘুদের জনমনে র্যাবের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে, গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।