মোঃ আঃ জলিল মন্ডল(ক্রাইম)রিপোটার গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা পৌরসভার আদর্শ কলেজ সংলগ্ন এলাকায় সাড়ে ১৬ শতক জমির দলিল সহকারি কমিশনার (ভুমি) দপ্তরে ভুয়া প্রমাণিত হলেও ওই জমি জবর দখলের পাঁয়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল। ওই জমির প্রকৃত মালিক গতকাল বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ফিরে পাওয়ার এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জিলস্নুর রহমান উল্লেখ করেন, পলাশবাড়ি উপজেলার মহদীপুর দুর্গাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদ সরকার ১৯৬৮ সালে গোবিন্দপুর মৌজার গাইবান্ধা আদর্শ কলেজ সড়ক সংলগ্ন এলাকায় খতিয়ান নং ২৪৭৪, এসএ দাগ নং ২৫২৭ সাড়ে ১৬ শতক জমি গোবিন্দপুরের আব্দুল কুদ্দুস সরকারের স্ত্রী মোছা. ধলি বিবির কাছ থেকে ক্রয় করে ভোগ দখল করছিলেন। পরবর্তীতে তার পিতা ২০০২ সালের ২৮ মার্চ মারা গেলে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য তারা ৪ ভাই ব্যবসা ও চাকরি করার কারণে ঢাকায় বসবাস করে। এরপর তার দুই ভাই মারা যায়। পরবর্তীতে ২০২৩ সালে থানসিংহপুর তহশিল অফিসে ওই জমির খাজনা দিতে গিয়ে জানতে পারে ১৯৭৫ সালের ২৩ মার্চ, দলিল নং ৬৩৯১ মূলে ধলি বিবিকে বিক্রেতা দেখিয়ে গোবিন্দপুরের গোলজার হোসেনের ছেলে আবুল হোসেন সরকার ভুয়া দলিল তৈরী করে নিজের নামে সম্পাদন করে নেয়। এরপর আবুল হোসেন সরকার ওই জমির খাজনা দিয়ে তার নামে খারিজ করে। পরবর্তীতে আবুল হোসেন সরকার গাইবান্ধা থানাপাড়া মৃত শাহ বছির উদ্দিনের ছেলে শাহ শামিউল ইসলামের কাছে ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর ৮৭৯৩ নং দলিল মূলে বিক্রি করে। পরে শাহ শামিউল ইসলাম নামজারি কেস নং ৯৮/২০১২/২০১৩ অর্থ বছরে তা সম্পাদন করে নেয়। এরপর তারা জমির খাজনা দিতে গেলে জানতে পারে ওই জমির মালিক শাহ শামিউল ইসলাম। পরে তারা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে ওই জমির খারিজ বাতিলের জন্য মিস কেস (নং ১১৮/২০২২-২০২৩) দায়ের করলে সহকারি কমিশনার (ভুমি) গাইবান্ধা সদর শাহ শামিউল ইসলামকে শুনানির জন্য একাধিকবার নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু শুনানীতে শামিউল ইসলাম যে কাগজপত্রই দাখিল করে। তা সঠিক নয়। ফলে সহকারি কমিশনার (ভুমি) সদর আব্দুল মজিদ সরকারের ওয়ারিশদের পক্ষে মিস কেসের রায় প্রদান করেন। এরপর ওই জমি ক্রয় সুত্রে জমির প্রকৃত মালিক কে? তা যাচাই বাছাই করার জন্য সহকারি কমিশনার (ভুমি) গাইবান্ধা সদর সাব রেজিস্টার অফিসকে একটি নোটিশ প্রদান করে। সেই নোটিশে উলেস্নখ করা হয়, প্রকৃত জমির মালিক তার পিতা আব্দুল মজিদ সরকার। ওই জমিতে বর্তমানে আব্দুল মজিদ সরকারের ওয়ারিশদের নামে সাইন বোর্ড লাগানো রয়েছে। এছাড়া শাহ শামিউল ইসলামের নামে ওই দলিলটি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। অন্যদিকে শামিউল ইসলাম ও তার লোকজন নানা ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে উক্ত জমিতে বাঁশে খুটি পুঁতে দখল করার পাঁয়তারা করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, সাড়ে ১৬ শত জমির মধ্যে ৮ শতক জমি শেখ কামাল আইটি সেন্টার নির্মাণের জন্য সরকার ভুমি অধিগ্রহণ করেন। এরপর আব্দুল মজিদ সরকারের ওয়ারিশরা তাদের নামে নাম জারি করার জন্য সহকারি কমিশনার (ভুমি) গাইবান্ধা সদর বরাবরে আবেদন করে। তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সহকারি কমিশনার (ভুমি) সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ক্রয়কৃত ওই জমি ফিরে পাওয়ার দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপসি’ত ছিলেন মো. জহুরুল হক, আব্দুল মমিন, আব্দুল মোত্তালিব মন্ডল, কনা বেগম, মানিক খান প্রমুখ।