মোঃ আঃ জলিল মন্ডল(ক্রাইম)রিপোর্টার গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা কলেজপাড়া গ্রামে স্ত্রী শেফালি বেগম হত্যার ঘটনায় স্বামী মহসিনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও অন্যান্য আসামিদের এখন গ্রেফতার করেনি। ফলে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলার বাদিকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে ও তাদের ফাঁসির দাবিতে ১২ জুলাই বুধবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন থেকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া গ্রামের মৃত কাদের মোল্লা ছেলে রুবেল মিয়া লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন তার ছোট বোন শেফালি বেগম (২২) এর সাথে প্রায় ৪/৫ বছর পূর্বে সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের কলেজপাড়া গ্রামের মো. নুরু প্রামানিকের ছেলে মহাসিন (২৮) এর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা জানতে পারে মহাসিন ডাকাত দলের সদস্য হওয়ায় ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের কাছে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল। মহাসিন কোনো কাজ করতো না। এ নিয়ে প্রায়ই শেফালির সাথে ঝগড়া বিবাদের জেরে তাকে শারীরিক নির্যাতন চালাতো। এরই জের ধরে গত রমজান মাসে শেফালি স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে যায়। সেখানে থাকাকালে আসামি মহাসিন, তার বাবা নুরু প্রামানিক, এলাকার লোকজন ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ ওই বাড়িতে গিয়ে জানায়, শেফালিকে আর কোনদিন নির্যাতন করবে না বলে অঙ্গীকার করে তাকে গত ঈদ-উল ফিতরের কয়েকদিন পূর্বে মহাসিনের বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর মহাসিন পূর্বের ন্যায় আবারও তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন সইতে না পেরে শেফালি গত ২৮ জুন ঈদ উল আজহার আগের দিন আবারও তাদের বাড়িতে চলে যায়। তখন উক্ত আসামি মহাসিন কয়েকদিন পর আবারও ওই বাড়িতে গিয়ে মহাসিন ভুল হয়েছে আর কোনদিন ভুল করবে না বলে তার বড় ভাই ও মুরুব্বীদের সাথে কথা বলে শেফালিকে পুনরায় গত ৭ জুলাই তার বোনকে মহাসিনের বাড়িতে পাঠায়। সেখানে নিয়ে গিয়ে আবারও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে মহাসিন, তার পিতা নুরু প্রামানিক, মাতা ময়না বেগম, তার ভাতিজা আলম মিয়ার যোগসাজসে শেফালিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষয়টি শেফালি বুঝতে পারলে এর প্রতিবাদ করায় ১নং আসামি মহাসিন ক্ষিপ্ত হয়ে তার নেতৃত্বে তার লোকজনদের সাথে নিয়ে গত ৮ জুলাই তাকে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখে।
এরপর ওই বাড়ির প্রতিবেশী আত্মীয় ফুফাতো ভাবীর মাধ্যমে শেফালি হত্যাকান্ডের বিষয়টি জানতে পারে। এ ঘটনায় রুবেল মিয়া বাদি হয়ে গত ৮ জুলাই রাতে সাদুল্যাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা (নং ০৬) দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে অন্যান্য আসামি মামলা থেকে নাম তুলে নেয়ার জন্য মোবাইল ফোনসহ নানাভাবে হুমকি প্রদান করছে। আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাঘুরি করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নিহত শেফালির জেঠা কালাম মোল্লা, মো. আব্দুল খালেক, মো. ছাইদার মিয়া।