Tuesday, September 16, 2025
spot_img

নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।

Homeবাংলাদেশচেক ডিজঅনার মামলা হাইকোর্টের রায় ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত

চেক ডিজঅনার মামলা হাইকোর্টের রায় ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত

মোহাম্মদ সাইদঃ

চেক ডিজঅনারের মামলায় কোনো ব্যক্তিকে জেলে পাঠানো সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি বলে দেয়া হাইকোর্টের রায় আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এরপর এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বিচারপতি মো. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন চেম্বার জজ আদালত মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন।

এর আগে চেক ডিজঅনার মামলায় কাউকে কারাগারে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তির রায়ে গত ২৮ আগস্ট ওই অভিমত দিয়েছিলেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর আবেদনের কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, রায়টির ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এ আবেদনের ওপর শুনানির পর তা স্থগিত করেন।

চেক ডিজঅনার মামলায় কাউকে কারাগারে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে বলেছেন, কোনো ব্যক্তিকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট, ১৯৮১-এর ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনার মামলায় ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দি রাখা ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণের শামিল।

আইনজীবীরা জানান, এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি অভিমত দিয়েছেন আদালত। সেখানে বলেছেন, এনআই অ্যাক্টের মামলায় বিশেষ করে চেক ডিজঅনারের মামলায় কাউকে জেলে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থি। আদালত ধারাটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এসব মামলা নিষ্পত্তিতে একটি নীতিমালা করে দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সেটি থাকবে বলেও জানিয়েছেন আদালত।
আদালত আরও বলেছেন, চেক ডিজঅনার মামলায় কোনো ব্যক্তিকে জেলে পাঠানো ইন্টারন্যাশনাল কভিনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তির ১১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে সই করা দেশ।

সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের চেক ডিজঅনার মামলার উদাহরণ দিয়ে আদালত বলেন, এসব দেশে এ মামলায় ব্যক্তিকে জেলে পাঠানোর বিধান নেই। এসব দেশে চেক ডিজঅনার মামলাকে দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

১৯৮১ সালের এ আইনটি (বাংলাদেশ নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট) ১৯৯৪ সালে দণ্ডবিধিতে সংযোজনের মাধ্যমে আধা-ফৌজদারি হিসেবে পরিণত করা হয়েছে।

আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য কোনো ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দি রাখা যাবে না। চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য যদি ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়, তাহলে অচিরেই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কারাগারে চলে যাবে। নিশ্চয়ই এমনটা কারো কাম্য নয়। তাই আদালত মনে করেন, আইনটির ১৩৮ ধারা দ্রুত সংশোধন করে কারাগারে পাঠানোর বিধান বাতিল করা দরকার। জাতীয় সংসদ দ্রুত এ ধারা সংশোধন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আদালত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments