এসএম রুবেল
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে এক বৃদ্ধকে মারধর করে মাথা ফাটিয়েছে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা। রবিবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের চৈতন্যপুর গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হয় চৈতন্যপুর গ্রামের মৃত রইসুদ্দিন মন্ডলের ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন (৬২)।স্থানীয় বাসিন্দা,প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতের স্বজন সূত্রে জানা যায়, বাসায় থাকা টিউবওয়েলসহ বাড়ির সীমানা দেয়াকে কেন্দ্র করে ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোয়াজ্জেমের বাসায় কয়েকজন গ্রাম পুলিশ সদস্যকে পাঠায়। এসময় ইউনিয়ন পরিষদে যেতে রাজি না হওয়ায় গ্রাম পুলিশ সদস্যরা তাকে লাঠি দিয়ে দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এমনকি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধর করে তারা।
মারধরের পর জোরপূর্বক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া যায় বৃদ্ধ মোয়াজ্জেম হোসেনকে। পরে তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে তার স্বজনরা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে মোয়াজ্জেম হোসেন।আহত মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ২০০৬ সালে একটি সরকারি টিউবওয়েল স্থাপন করা হয় আমার বাসায়। এরপর থেকে আমার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা পানি ব্যবহার করে। কিন্তু হঠাৎ করেই ছেলেদের জমিজমা ভাগ-বাঁটোয়ারা করে দেয়ার পর সেখানে ঘর নির্মাণ করা হয়। এনিয়ে চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে জোরপূর্বক বাসা থেকে নিয়ে যেতে চাই। আমি যেতে না চাইলে গ্রাম পুলিশ সদস্যরা লাঠি দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এমনকি বেধড়ক মারধর করে।তিনি আরও বলেন, আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় আমাকে জোরপূর্বক ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চেয়ারম্যান ফাঁকা কাগজে আমার দুইটি সাক্ষর নেয়। পরে খবর পেয়ে আমার স্বজনরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্বার করে নিয়ে আসে।
আহতের ভাতিজা আমিনুল ইসলাম জানান, চাচাকে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা এই মুহুর্তে আতঙ্কিত, নিরাপত্তাহীনতা ও হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই। ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ সদস্য শ্রী নিরঞ্জন কর্মকার, আনারুল ইসলাম, শ্রী জিতেন, আব্দুল আলিম, মো. জালাল, শ্রী ভুটু লাল, শ্রী বিকেব সিংহ, আলাল উদ্দিন এই মারধর করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে ধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বলেন, মারধরের ঘটনাটি সঠিক নয়। উল্টো গ্রাম পুলিশ সদস্যদেরকেই মারধর করা হয়েছে।
শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, এবিষয়ে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযোগের প্রমাণ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।