asd
Saturday, September 7, 2024

নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।

Home বাংলাদেশ চোরাই ব্যবসায় খুলেছে জাহাঙ্গীরের কপাল, অল্পদিনে হয়েছেন কোটিপতি

চোরাই ব্যবসায় খুলেছে জাহাঙ্গীরের কপাল, অল্পদিনে হয়েছেন কোটিপতি

মোঃ মাছুম আহমদ মৌলভীবাজার

চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলম (৩০)। বাবা বদর উদ্দিনের পুরোনো ব্যবসার হাল ধরে স্থানীয় বাজারে বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রি করে চালাতেন সংসার। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পুরো পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন জরাজীর্ণ বাড়িতে। আর্থিক অনটনে পড়ালেখায় মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। একসময় পলিথিন বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহকারী জাহাঙ্গীরের উত্থানের কাহিনী সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। অল্প কয়েক বছরে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তিনি। প্রশাসনের নাকের ডকায় ব্যবসা করে বানিয়েছেন আলিশান বাড়ি, কিনেছেন অসংখ্য দামি গাড়ি। এমনই এক অনুসন্ধানে তার আঙুল ফুলে কলাগাছের বিষয়টি জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বাবার পলিথিন ব্যবসার পাশাপাশি শুরু করেন ভারতীয় নিষিদ্ধ চোরাই নাসির বিড়ির ব্যবসা। পাশাপাশি চোরাই বিভিন্ন পণ্য ভারত থেকে এনে ব্যবসা করতে থাকেন। এসব ব্যবসার সুবাদে তিনি দেশে এবং ভারতে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী চোরাই সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে অবৈধ ভারতীয় গরু-মহিষ ও চিনির ব্যবসা শুরু করেন। এসব ব্যবসার মাধ্যমে তিনি অদৃশ্য এক আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যান। তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি বনে যান কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে তার লাইফস্টাইল ভারতের যেকোনো জনপ্রিয় নায়ককেও হার মানায়। তার চারপাশে থাকেন কয়েকজন বডিগার্ড। জাহাঙ্গীর ও তার বডিগার্ডের সাথে সব সময় থাকে অবৈধ বিভিন্ন অস্ত্র। এসব অস্ত্রের ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চান না। শুধু কী তাই, পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকার সুবাদে ইতিমধ্যে সে সিলেট বিভাগের চোরাকারবারিদের মূল হোতায় পরিণত হয়েছে। তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই মামলা-হামলার শিকার হতে হন যে কাউকে। তার হামলা ও মামলার ভয়ে অনেকেই এলাকা ছাড়া হয়েছেন। হামলা মামলা থেকে বাদ যাননি সাংবাদিকরাও। কথায় কথায় সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তার অপকর্মের বিষয়ে জানতে চাইলে নিজ ইউনিয়ন তালিমপুরের কোনো মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে চাননি।
বড়লেখার স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর আলম (৩০) দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে চোরাচালানের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নারী নির্যাতনসহ চোরাচালানের কয়েক ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। তারপরও সে বীরদর্পে চোরাচালান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জাহাঙ্গীর এসব করছে- এ নিয়ে এলাকায় ঘুরপাক খাচ্ছে নানামুখী প্রশ্ন।
টানা কয়েক বছর একযোগে চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসা চালিয়ে জাহাঙ্গীর বনে গেছেন বিপুল বিত্তভৈববের মালিক। পুলিশ ও প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকার সুবাদে পাহাড় সমান সম্পত্তি গড়ার মাধ্যমে বিশাল সিন্ডিকেট গড়ে তোলেছেন। ভারতীয় চিনি চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযানে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে থেকে যান ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময়ে কোনো সম্পত্তি না থাকলেও জাহাঙ্গীর এখন নতুন নতুন জমি কিনেছেন হরহামেশা। একসময় জরাজীর্ণ বাড়ি ছিল। এখন বানিয়েছেন বিদেশি সরঞ্জামাদি দিয়ে আলিশান বাড়ি।
চোরাকারবারির অবৈধ টাকায় কিনেছেন অর্ধকোটি টাকার প্রাইভেট কার। এ কারে সে চলাচল করে ফিল্মি স্টাইলে। আগে পিছে থাকে মোটরসাইকেলের মহড়া। এ ছাড়াও তার রয়েছে দামি আরেকটি কার, ডিআই একটি পিকআপ, একটি এইচপি পিকাপসহ কয়েকটি ভারতীয় অবৈধ মোটরসাইকেল। এই গাড়িগুলো মূলতঃ মাদক পাচার ও চিনি চোরাচালানের কাজে ব্যবহৃত হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয়দের সাথে আলাপে আরও জানা যায়, জাহাঙ্গীর একজন চিহ্নিত চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসায়ী। তাদের অভিযোগ, আগে সে গোপনে চিনি চোরাচালান ও মাদক ব্যবসা করলেও দুই বছর ধরে প্রকাশ্যে মাদক ও ভারতীয় অবৈধ চিনি বিক্রি করছে। বিশেষ করে বিয়ানীবাজার, বড়লেখা, জুড়ী ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় জাহাঙ্গীর প্রতিনিয়ত ভারতীয় অবৈধ চিনি ও মাদক বিক্রি করলেও প্রশাসন দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব থানার ওসিদের সাথে রয়েছে তার বেশসখ্যতা। ব্যক্তিগত ব্যবহৃত অর্ধ কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে নিয়মিত থানায় যাতায়াত করার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে প্রতিবেদকের কাছে।
বিভিন্ন থানায় তার মামলাগুলো হলো- সিলেট এর বিয়ানীবাজার থানার, এফআইআরনং-১৯/১৭৮, তারিখ- ২০ আগস্ট, ২০১৯; বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযুক্ত। মৌলভীবাজার এর বড়লেখা থানার এফআইআর নং-১০/৫০, তারিখ- ১৩ মার্চ, ২০১২, ধারা- ১৫(১) ১৯২৭ সালের বন আইন,, এজাহারে অভিযুক্ত।
বড়লেখা থানার এফআইআর নং-০২/১৪৮, তারিখ- ০৩ নভেম্বর, ২০০৭; ধারা- ১৪৩/৩২৩/৩২৪/৩৭৯ পেনাল কোড-১৮৬০;, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার এফআইআর নং-১৬/২৭৬, ২০১২; ধারা-৪৪৭/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০;, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার এফআইআর নং-১৪/৫৪, ২০১২; ধারা- ১৫(১) ১৯২৭ সালের বন আইন এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার এফআইআর নং-১৫/৫৫, ২০১২; ধারা- ৩০৭/১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৫/৩৭৯/৩৮০/৩৫৪/৫০৬/৪২৭ পেনাল কোড- ১৮৬০,, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-০৩/৩২,২০০৮; সময়- ধারা- ৪৪৭/৩২৩/৩৫৪/৩৭৯/৩৪/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০;, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-৬/১৩৪, ২০১৮, জি আর নং-১৩৪/২০১৮, ২০১৮; ধারা- ১১(গ)/৩০ ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩; তৎসহ ৩১৩ পেনাল কোড-১৮৬০;; এজাহারে অভিযুক্ত।
বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-৩/১০১, ২০২০; জি
আর নং-১০১/২০২০, ২০২০; ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/১১৪/৫০৬ পেনাল কোড-১৮৬০;, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার এফআইআর নং-২, ২০২৩; জি আর নং-২, ২০২৩; ধারা- ২৫-৪ The Special Powers Act, 1974;, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-৯, ২০২২; জি আর নং-২১২, ২০২২; ধারা- ২৫ ৪ এর ১ (৪) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন,, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-১৩/১৬০, ২০২১; জি আর নং-১৬০/২০২১, ২০২১; ধারা- ২৫-৪ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন, এজাহারে অভিযুক্ত। বড়লেখা থানার, এফআইআর নং-২/১৯, ২০২১; জি আর নং-১৯/২০২১, ২০২১; ধারা- ২৫৪ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন;, এজাহারে অভিযুক্ত। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় আরও মামলা রয়েছে।
চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা উপজেলার তালিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে ফোন কেটে দেন।
বড়লেখা উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম চিহ্নিত চোরাকারবারি ও মাদক পাচারকারী। চোরাচালানের পণ্যসহ কয়েকবার তিনি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। তার ভয়ে এলাকার কোন মানুষ মুখ খুলতে চান না।
বড়লেখা উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান বলেন, একসময় সে উপজেলা কৃষক লীগের কমিটিতে ছিল। পরবর্তীতে চোরাকারবারিসহ নানা অভিযোগের কারণে তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সে একজন চিহ্নিত চোরাকারবারি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমকে ফোন দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনার পর গালাগাল ও হুমকিধামকি দিয়ে ফোন কেটে দেন।
বড়লেখা থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে বড়লেখাসহ বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

RELATED ARTICLES

ঈশ্বরদীতে দিনব্যাপী রক্তের গ্রুপ নির্নয় ও গাছের চারা বিতরন

মোঃ নাজমুল ইসলাম, ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা : "রক্ত দিলে বাঁচতে পারে একটি প্রাণ, তাইতো করবো...

নওগাঁর মহাদেবপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের মাসিক ইউনিয়ন সভা অনুষ্ঠিত

সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের মাসিক ইউনিয়ন সভা...

যেখানেই অন্যায় অত্যাচার দেখবেন সেখানেই এক একজন জিয়ার সৈনিক হিসেবে দাড়িয়ে যাবেন : ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি 

প্রকাশের সময় : ঢাকা, শুক্রবার ২২ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,২ রবিউল আওয়াল ১৪৪৬হিজরি,আপডেট ০৬:৩০পিএম . মোহাম্মদ সাইদ : ঢাকার কেরানীগঞ্জে...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

ঈশ্বরদীতে দিনব্যাপী রক্তের গ্রুপ নির্নয় ও গাছের চারা বিতরন

মোঃ নাজমুল ইসলাম, ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা : "রক্ত দিলে বাঁচতে পারে একটি প্রাণ, তাইতো করবো...

নওগাঁর মহাদেবপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের মাসিক ইউনিয়ন সভা অনুষ্ঠিত

সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের মাসিক ইউনিয়ন সভা...

যেখানেই অন্যায় অত্যাচার দেখবেন সেখানেই এক একজন জিয়ার সৈনিক হিসেবে দাড়িয়ে যাবেন : ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি 

প্রকাশের সময় : ঢাকা, শুক্রবার ২২ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,২ রবিউল আওয়াল ১৪৪৬হিজরি,আপডেট ০৬:৩০পিএম . মোহাম্মদ সাইদ : ঢাকার কেরানীগঞ্জে...

র’এজেন্ট কামরুজ্জামান বহাল তবিয়তে 

র এজেন্ট কামরুজ্জামান বহাল তবিয়তে  দুর্নীতির কার্যক্রমে অব্যাহত র এজেন্ট কামরুজ্জামান 

Recent Comments