হাবিবুর রহমান নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার অফিসে ভুয়া দাতা সাজিয়ে দলিল সম্পাদন করেছেন ডোমার সাব-রেজিস্টার অফিসের দলিল লেখক রবিউল ইসলাম। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায় দলিল দাতা নুরজাহান বেগম রুমা ও হাবিবুর রহমান উভয়ের স্বামী স্ত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন সংসার জীবন অতিবাহিত করে তাদের কোলজুড়ে একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে সন্তানের আগমন ঘটে। এরই মধ্যে হাবিবুর রহমান এবং নুরজাহান বেগম রুমাসহ ২ জনের নামে উপজেলার পশ্চিম বোড়াগাড়ী মৌজাস্থ এলাকায় জমি ক্রয় করেন।কিছুদিন আগে নুরজাহান বেগম রুমা পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে স্বামী সন্তানাদি রেখে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে সংসার জীবন অতিবাহিত করছেন। এরই মধ্যে রুমার পূর্বের স্বামী হাবিবুর রহমান অন্যত্র বিয়ে করে তিনিও নতুন দম্পতি নিয়ে সংসার জীবন শুরু করেছেন। গত ১০ অক্টোবর তারিখে উক্ত ক্রয়কৃত জমির মধ্যে নুরজাহান বেগম রুমার অংশের মালিকানা হস্তান্তরের জন্য হাবিবুর রহমান সু-কৌশলে পূর্বের স্ত্রী নুরজাহান বেগম রুমার ভোটার আইডি কার্ড ও ছবি লাগিয়ে দিয়ে সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে সাব-রেজিস্টারের সামনে বোরখা পরে হাজির দেখিয়ে তাকে নুর জাহান বেগম রুমার নামীয় অংশ ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মূল্য নির্ধারণ করে স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে রুমার রেখে যাওয়া ছেলে আবু সাঈদ এবং মেয়ে সানজিদা নুর সঞ্চিতার নামে উক্ত দলিলটি সম্পাদন করেছেন। উক্ত সম্পাদনকৃত দলিলটি মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে দলিল লেখক রবিউল ইসলাম লোকচক্ষুর আড়ালে সাব-রেজিস্টার মাহফুজুর রহমানকে বোকা বানিয়ে হেবা ঘোষণা পত্র দলিলটি সম্পাদন করে দেন। এবিষয়ে ডোমার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দলিল লেখক জানিয়েছেন কিছুদিন আগেও রবিউলের নামে দলিল ও জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে দুদক টিমের তদন্ত হয়ে যেতে না যেতেই সে আবারও একটা অপরাধ করে বসলো। তারা আরও বলেন, আমরা স্থানীয় দলিল লেখকরা হাবিবুর ওরফে হাবলুর পূর্বের স্ত্রী পালানোর বিষয়টি সকলে অবগত তাই হাবিবুর কৌশলে আশেপাশের সকল সরকারকে বাদ দিয়ে উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের সরকার রবিউলকে দিয়ে কাজটি করিয়েছে যাতে করে সাপও মরে লাঠিও যেন না ভাঙে, অথচ হাটে হাঁড়ি ভেঙে গেল। দলিল লেখক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা এবং সাধারণ সম্পাদক ফারুক ইসলাম টয় বলেন, হাবিবুর রহমান ওরফে হাবলু ভিষণ চালাক ব্যক্তি,আমাদেরকে দিয়ে তার এইকাজটা করানো সম্ভব হবে না বলে সে গ্রামের সরকার রবিউলকে দিয়ে কৌশলে দলিলটি পার করিয়েছে। তবে তার এই কাজটি করা উচিত হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন। এবিষয়ে দলিল লেখক রবিউল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করার তার বক্তব্যে প্রদান করা সম্ভব হয়নি। দলিল সম্পাদনের বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় নুরজাহান বেগম রুমার বর্তমান স্বামী আলফাজ মামুনের সাথে তিনি জানিয়েছেন দলিল সম্পাদনের বিষয়ে আমরা কিছুই জানিনা তাছাড়া আমার স্ত্রী নুরজাহান বেগম রুমা রেজিস্ট্রি অফিসেও যায়নি কোন দলিলেও সই করেনি। এবিষয়ে ডোমার সাব-রেজিস্টার মাহফুজুর রহমান প্রতিবেদককে জানান যে, দাতা সনাক্ত করার দায়িত্ব দলিল লেখক এবং সনাক্তকারী সাক্ষীর, যদি কেউ বোরখা পরে আসে তাহলে সেই ব্যক্তিকে সনাক্ত করবে দলিল মুসাবিদাকারী দলিল লেখক এবং সনাক্তকারী সাক্ষী। এছাড়া কেউ অভিযোগ করলে সেটা আমরা ব্যবস্থা নিব এবং দলিল লেখক যে মুসাবিদা করছে আমি তাকে ধরবো। ভোটার আইডি কার্ড এবং ছবির সঙ্গে দাতার চেহারার মিল আছে কিনা সেই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানেই কথা থেকে যায়, দলিলটা কি দলিল হয়েছে, আর জমিটা কি বাইরের লোকের কাছে গেছে নিজের ছেলেমেয়ের কাছেই আছে। আর সনাক্তকারীই সনাক্ত করবে আমি পর্দাশীল মহিলাকে সনাক্ত করবো না। দলিল সম্পাদন হওয়ার সময় তো সনাক্তকারী সাক্ষী উপস্থিত থাকে না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলিল মুসাবিদা যে করে তার সামনে ঘটে, আর আপনারা যা মনে করেন তাই লেখেন। আমার অধীনস্ত যে সরকার এই কাজটা করেছে আমি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব এবং এটার সম্পুর্ণ দায়ভার দলিল লেখকের উপর। পরিশেষে তিনি আরও বলেন, যেহেতু এই অফিসের আমি অথরিটি,সেই ক্ষেত্রে আলটিমেটলি দায়ভারটা আমার উপরেই এসে পড়ে। এবিষয়ে নীলফামারী জেলা রেজিস্টার সাখাওয়াত হোসেন প্রতিবেদককে জানিয়েছেন যে, এই রকম অনিয়ম যদি কেউ করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি আপনারা সংবাদ প্রকাশ করে পেপার কার্টিং পাঠান তাহলে সেই দলিল লেখকের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সুবিধা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সেলিম খান, নির্বাহী সম্পাদকঃ শেখ রবিউল ইসলাম আজম। যোগাযোগঃ ০১৮১১-২০২৫৩৩
বিঃদ্রঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি নিজস্ব একাউন্ট থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে, যে-কনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।