মোহাম্মদ সাইদ (স্টাফ রিপোর্টার) : নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা এবং ফ্যাসিবাদীদের নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় ঢাকার ধামরাইয়ে পৌরশহরের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাবাড়ি মাঠে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার ২৪ফ্রেরুয়ারী বিকেল ৩টার মধ্যে মূল অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। বেলা দেড়টার টার মধ্যেই বাদ্যযন্ত্রসহ অনুষ্ঠানস্থলের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে গেছে নেতাকর্মীদের। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো ধামরাই পৌরশহর।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে হিসেব উপস্হিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচীব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ।প্রধান অতিথি বক্তব্যে বলেন বর্তমান সরকারকে এ দেশের ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক দলগুলো সবাই মিলেই ক্ষমতায় বসিয়েছে।মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল, যেসব জায়গায় সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো শেষ করে বর্তমান সরকার দ্রুত সবার ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু এখন নতুন খেলা শুরু হয়েছে। কিছু কিছু দল বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে হবে। তাদের অনুরোধ করে বলতে চাই, দেশকে আর ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবেন না, নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেবেন না।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘প্রথম থেকে বলেছি, সহযোগিতা করেছি। সংস্কারের যতগুলো প্রস্তাব এসেছে, আমরা দেখছি, সেগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।গত ১৫ বছরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন ও ভোগান্তির কথা তুলে ধরে দলের মহাসচিব বলেন, হাসিনা সরকার, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই দেশ থেকে রাজনীতিকে চিরতরে নির্বাসিত করার জন্য, শুধু তাঁর দল থাকবে, আর কোনো দল থাকবে না, এভাবে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল। রাষ্ট্রের সব ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, সব ইনিস্টিটিউশন ধ্বংস করেছে, সবচেয়ে আগে ধ্বংস করেছে নির্বাচনব্যবস্থা। ২০১৪ সালে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে সরকার ঘোষণা করেছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে কুকুর ঘোরাঘুরি করেছে। শফিউল আলম প্রধান তখন বলেছিলেন, ‘কুত্তামার্কা নির্বাচন’।
রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর শেখ হাসিনার অন্যায়ের ফল বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কিছুদিন আগে চোখে পড়ল, ফ্যাসিস্ট হাসিনা কান্না করতে করতে বলছে, “আমার বাবার বাড়িটা ৩২ নম্বরে আমরা দিয়েছিলাম, জাদুঘর করেছিলাম, সেটাকে পর্যন্ত ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেন, কী আমার অপরাধ।” অপরাধ? এটাই তো আপনি বুঝতে পারছেন না হাসিনা। আপনার কী অপরাধ? আপনি একটা জাতিকে ধ্বংসের চক্রান্ত করেছেন। আপনি একটা জাতির অধিকারকে ধ্বংস করেছেন। আপনি দেশকে বিক্রি করে দিয়েছেন। ধর্মকে ধ্বংস করতে চেয়েছেন। ইতিহাসকে বিকৃত করেছেন।’
বেলা দুইটার দিকে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী। ঢাকা-২ আসনের জনতার এমপি ঢাকা জেলা বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার ইরফান ইবনে আমান অমি।সভায় প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে উপস্হিত ছিলেন।বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ (টিটু) ও নজরুল ইসলাম (আজাদ)।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহপরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন (বাবু), বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ধামরাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি তমিজ উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল ইসলাম, ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস (মুরাদ), সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান, ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান, সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান মোহন প্রমুখ।