সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
দেশের সীমান্তবর্তী বরেন্দ্র অঞ্চলের জেলা নওগাঁয় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। তীব্র শীত আর হিমেল হাওয়ায় বাড়ছে ঠান্ডাজনিত নানা রোগের প্রকোপ। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। জেলার হাসপাতালগুলোতে হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের। এমন পরিস্থিতিতে ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে রক্ষা পেতে শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ২০-৩০ জন। এ প্রতিবেদন লোখা পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ১৫০ জন রোগি ভর্তি রয়েছে। রোগির সংখ্যা আরও বাড়লে মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিদিনই শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগির সংখ্যা বাড়ছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বয়ষ্ক ও শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। হাত-পায়ে মোজা পরাতে হবে। আবার ঘামে কি না, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।’ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারহানা আক্তার বলেন, ‘প্রতিদিনই প্রায় ২০-৩০জন করে রোগি ভর্তি হচ্ছেন শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। বর্তমানে ১৫০ জন রোগি ভর্তি আছে। আরও রোগি বাড়লে মেঝেতে চিকিৎসা দিতে হবে।’ চার বছরের শিশু রুনু রাণীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি গ্রামের সুখী রাণী। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের ডায়রিয়া হয়েছে পাঁচদিন ধরে হাসপাতালে রয়েছি। এখন একটু সুস্থ্য। অনেক রোগির চাপ এখানে। তবুও ডাক্তাররা সাধ্যমতই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’ নওগাঁ শহরের উকিলপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রিমি খাতুন বলেন, ‘নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত আমার ১১ মাস বয়সী ছেলেকে দুই দিন আগে ভর্তি করেছি হাসপাতালে। ডাক্তাররা বলছে আরও ৪-৫ দিন ভর্তি থাকতে হবে।’ মান্দা উপজেলার জোতবাজার এলাকার মানিক হোসেন বলেন, ‘ঠান্ডা লাগার কারণে ডায়রিয়া হয়েছে। তিনদিন হলো হাসপাতালে ভর্তি আছি। চিকিৎসকরা ভালো করেই চিকিৎসা করছেন। বর্তমানে কিছুটা সুস্থ্যতাবোধ করছি।’ নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস এর মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রিফাত হাসান বলেন, ‘শীতজনিত কারণে হাসপাতালে স্বাভাবিকের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কিছুটা বাড়ছে। শীতের গরম পোশাক পরিধান করাসহ ঠাণ্ডা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’