সুমন কুমার ঘোষ বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ নওগাঁয় অবৈধভাবে চলছে অধিকাংশ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, হাতুড়ে ডাক্তার ও নার্সের পরিবর্তে আয়া দিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি জেলার পত্নীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ওটি বয় দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পত্নীতলা উপজেলার ইসলামিয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওটি বয় আব্দুস সোবহান। এসএসসি পাস না করলেও অপারেশন করেন তিনি। সম্প্রতি তিনি এক নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, অপারেশনের মাধ্যমে এক গর্ভবর্তী নারীর পেট থেকে নবজাতক বের করে আনা হচ্ছে। ডাক্তার তৌফিক হাসান সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। আর ওটি বয় আব্দুস সোবহান বাচ্চাটিকে সরিয়ে রাখার পর থেকে অপারেশনের পরের বাকি কাজগুলো করছেন।
এদিকে ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ এসব ক্লিনিকে হরহামশায় ঘটে এমন ঘটনা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থাই নেই না তারা। দু-একটি ক্লিনিকে লোক দেখানো পদক্ষেপ নিলেও সপ্তাহ না ঘুরতেই সেসব ক্লিনিক আবারো আগের মতোই কার্যক্রম পরিচালনা করতে শুরু করে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আমি কোনো ডাক্তার না। ওটিতে বিভিন্ন ডাক্তারের সহযোগী হিসাবে থাকি। আপনারা যে ভিডিওটি দেখেছেন সেটিও ডাক্তার তৌফিক হাসান অপারেশন করেছেন। আমি সহযোগী হিসাবে ছিলাম মাত্র।’
ভিডিও’র বিষয়টি স্বীকার করে ডাক্তার তৌফিক হাসান বলেন, ‘সোবহান আমার সহযোগী হিসাবে ওটিতে ছিলেন।’
একজন ওটি বয় সিজারিয়ান অপারেশনে সহযোগীতা করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. তৌফিক বলেন, ‘এখানে যারা অপারেশন করতে আসেন তারা অত্যন্ত কম টাকা দেন। আর এ কারণে অ্যানেসথেসিয়া ও সহযোগী হিসাবে কোনো এমবিবিএস ডাক্তারকে রাখা সম্ভব হয় না। আমি নিজেই অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশন করে থাকি। আর সোবহান থাকেন আমার সহযোগী হিসাবে।’
পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটরে ওটি বয় দিয়ে সহযোগীতা করানোর কাজটি কোনো ভাবেই সম্ভব না। ওটি বয় কোনো ভাবেই রোগীর গায়ে হাত দিতে পারবেন না। তবে অপারেশনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামে এগিয়ে দিয়ে সহযোগীতা করতে পারেন। সোবহান বা ডা. তৌফিক যা করেছেন তা সম্পূর্ণ বেআইনী। তারা এটি কোনো ভাবেই করতে পারেন না।’
নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার জানান, ওটি বয় দিয়ে অপারেশন করানোর তথ্য রয়েছে তাঁর কাছেও। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সেলিম খান, নির্বাহী সম্পাদকঃ শেখ রবিউল ইসলাম আজম। যোগাযোগঃ ০১৮১১-২০২৫৩৩
বিঃদ্রঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি নিজস্ব একাউন্ট থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে, যে-কনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।