সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁয় পৃথক ধর্ষণ মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার সকালে নওগাঁর নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল ২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় ঘোসনা করেন। রাষ্ট্র পক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌশলী মোঃ মকবুল হোসেন জানান, নওগাঁ জেলার পত্নীতলা উপজেলার কাশিপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী নারী ২০২০ সালের ২৭ শে মার্চ বেলা আড়াইটার সময় তার বাড়ির পেছনে শুকনো পাতা ঝাড়ু দিতে গেলে একই গ্রামের শ্রী কাজল মালি পেছন দিক থেকে তাকে জাপটে ধরে মুখে গামছা বেঁধে তার স্বয়ংঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করব ধর্ষণ করে। এই অভিযোগে প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী ২০২০ সালের পহেলা এপ্রিল পত্নীতলা থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এ ঘটনায় আসামী আদালতে দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। অবশেষে আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয় ২০২২ সালের ৮ জুন মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত করা হয় এবং গত বৃহস্পতিবার উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবণ করা হয়। যুক্তিতর্ক শেষে আজ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য হলে আদালতের বিচারক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারো দন্ড ও এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ প্রদান করেন। আসামী পূর্ব থেকেই হাজতে থাকাই তাকে সাজা পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। আসামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট সোমেন্দ্র নাথ কুন্ডু মামলা পরিচালনা করেন জরিমানার অর্থ ধর্ষণের শিকার নারীকে প্রদানের নির্দেশ দেন বিচারক। অপর মামলাটি ২০১৪ সালের ১০ই জানুয়ারি পোরশা থানার। মাদ্রাসার ছাত্রী তার নানির বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা কালে কাসিতারা এলাকার জৈনিক হারুন শাহের আমবাগানে নিয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। রক্তাক্ত ও মুমূর্ষ অবস্থায় পরে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন ছাত্রীর নানাকে খবর দিলে তিনি এসে ভিকটিমকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করেন। পোরশা থানায় ছাত্রীর নানা অভিযোগ দায়ের করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে পোরশা থানার গোবরকুড়ি এলাকার মোঃ ওসমানের পুত্র হাপির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। আদালতে চলতি মাসের ২৩ তারিখ পর্যন্ত ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ যুক্তিতর্ক শ্রবণের জন্য দিন ধার্য থাকলে আসামি পলাতক থাকায় নিয়ম অনুযায়ী তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবী এস এম সারোয়ার হোসেন। উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে আদালতে আজ সকালে পলাতক আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ছয় মাস বীনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করার রায় ঘোষণা করেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ মেহেদী হাসান তালুকদার রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক থাকায় সাজা পরোয়ানা সহ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। জরিমানার টাকা ধর্ষণের শিকার নারীকে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।