ফয়সাল হোসাইন সনি,জেলা প্রতিনিধি বগুড়া
১১ জুলাই মঙ্গলবার ১২ টার সময় বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজ চত্তরে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ হয় ।
ছাত্রদলের মিছিলকে প্রতিহত করতে এসে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে ছাত্রলীগের দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে জড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত ছাত্রলীগের জেলা কমিটি ও পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা পাল্টা মিছিল ও সমাবেশ করেন।
গত বছরের গত ৭ নভেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সজিব সাহাকে সভাপতি ও আল মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে ৩০ সদস্যের বগুড়া জেলা শাখার আংশিক কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। এ ঘোষণার ঘণ্টাখানেক পরই কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন সংগঠনটির একাংশের নেতা-কর্মীরা। তখন থেকেই বগুড়ায় ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ সৃষ্টি হয়।
জেলা ছাত্রদল সূত্র জানায়, তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আজিজুল হক কলেজে মিছিলের উদ্যোগ নেয় মাহমুদুল নামে তাদের এক ছাত্রনেতা। কিন্তু সকালে কলেজে এসে ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর অবস্থা দেখে তারা মিছিল না করেই ফিরে যান।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দীকি রিগ্যান বলেন, এটা কোনো কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল না। জেলা সংগঠন থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারি শাহ সুলতান কলেজেও মিছিল করা হয়েছে। তবে আজিজুল হক কলেজে ছাত্রলীগের দু পক্ষের ঝামেলা দেখে সেখানে কর্মসূচি পালন করেনি মাহমুদুল।
পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের সদস্যদের মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রতিদিনের মতো কলেজের ছাত্রলীগের দলীয় স্ট্যান্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বসেছিলাম। এমন সময় জানতে পারি একটি ছাত্র রাজনীতি দল, যারা লন্ডন থেকে পরিচালিত কলেজে এসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা নিবে। এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছিলাম।
বর্তমান জেলা কমিটিকে অযোগ্য আখ্যায়িত করে মাহফুজুর বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমরা শেখ মুজিবুরের আদর্শে পরিচালিত। আমরা স্মার্ট সংগঠন, এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না। আর নতুন যে কমিটি এটা অযোগ্য কমিটি। তারা শিবগঞ্জে কমিটি দিয়েছে, যারা নাশকতা মামলায় জড়িত তাদের পদ দিয়েছে। সারিয়াকান্দি কমিটিতে বিবাহিতদের রেখেছেন। যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে অযোগ্যদের দিয়ে কমিটি করেছেন তারা।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব সাহা জানান, ছাত্রদলের একটি দল কলেজে প্রবেশের চেষ্টা করছে এমন একটি সংবাদ ছিল। তারা শিক্ষার পরিবেশ যেন নষ্ট করতে না পারে এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি।
ছাত্রলীগের আরেক পক্ষের অবস্থান নিয়ে জেলা সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সর্ববৃহৎ একটি সংগঠন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনেক নেতা-কর্মী থাকবে, এটাই বাস্তবতা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ পাশাপাশি অবস্থানে ছিল। মাঝখানে জেলা পুলিশের একাধিক সদস্যরা সতর্ক অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। জেলা ছাতলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রায় একশ জন নেতা-কর্মীরা মিছিল করেন। পরে বটতলায় তাদের সমাবেশ হয়।
একই সময়ে পদবঞ্চিতদের অন্তত একশ জন ছাত্রনেতারা পাশে অবস্থান নিয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। দলটির একাধিক সদস্যদের হাতে লোহার পাইপ, রড, স্ট্যাম্প দেখা যায়। তার জেলা কমিটিকে কলেজ থেকে চলে যাওয়ার দাবি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কয়েকদফায় বাকবিতণ্ডা করেন। পরে দুপুর একটার দিকে জেলা কমিটির নেতা-কর্মীরা চলে যান। এরপর পদবঞ্চিতরাও মিছিল করে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যান।
বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহিনুজ্জামান বলেন, পুলিশ ছাত্রদলের কোনো মিছিল বা তাদের উপস্থিতি পায়নি। কলেজে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের অবস্থানের খবরে আমরা উপস্থিত হই। কলেজে শিক্ষার পরিবেশ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ তৎপর ছিল, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি ।