Tuesday, September 16, 2025
spot_img

নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।

HomeUncategorizedমধুমতি এনজিওর টাকা ফেরতের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকেরা

মধুমতি এনজিওর টাকা ফেরতের দাবিতে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকেরা

এসএম রুবেল,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

পয়ত্রিশ হাজার পরিবারের লাখ লাখ মানুষের চোখের পানিও কি আপনাদের কাছে মূল্যহীন? আমাদের প্রতি কোন দয়ামায়া হয়না? এতোগুলো মানুষের ১০৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে যারা বসে আছে, তাদের বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে না? আমরা কি করব, কোথায় যাব? কার কাছে গেলে আমানতের টাকা ফেরত পাব এবং জনগণের টাকা আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে? এই টাকার জন্য এখন সংসার হারাতে বসেছি। এতোগুলো মানুষ সবাই মিলে আমরা আত্মহত্যা করলে কি আপনাদের টনক নড়বে?

রবিবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন, সদর উপজেলার বাসুদেবপুর এলাকার গৃহবধূ খালেদা খাতুন (৩৪)। তিনিসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবৈধ ও অনিবন্ধিত ভুয়া এনজিও মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থায় থাকা ৩৫ হাজার গ্রাহকের আমানতের ১০৫ কোটি টাকা ফেরতের দাবিতে সমবেত হয়েছিলেন প্রায় ৭ শতাধিক গ্রাহক। এসময় গ্রাহকেরা ভুয়া এনজিওর মালিক ও টাকা আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে করা কয়েকটি মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের দাবি জানান।

খালেদা খাতুন বলেন,জমি কেনার জন্য অনেক কষ্টে টাকাগুলো মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার বাসুদেবপুর শাখায় জমা রেখেছিলাম। টাকা নেয়ার সময় তারা বলেছিলো,যখন চাইবেন তখনই ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু জমি কেনার জন্য টাকা চাইতে গেলে তা ফেরত দিচ্ছে না। আমার স্বামী এখন আমাকে এই টাকা না দেয়ার জন্য ডিভোর্স দিতে চাই। আমি সংসার হারার উপক্রম হয়েছি। প্রশাসনের কাছে বারবার গেলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সদর উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের সূর্যনারায়নপুর গ্রামের স্নাতক পড়ুয়া লতিফা খাতুন বলেন, আমার কোন ভাই নাই। বাবার উপার্জনের ৬ লাখ টাকা মধুমতি এনজিও-তে জমা রেখেছিলাম। কিন্তু বাবা অসুস্থ হওয়ার পরেও এখন চিকিৎসা করার জন্য টাকা উত্তোলন করতে পারছি না। বারবার এনজিও অফিসে ঘুরেও দিব দিচ্ছি বলে না দেয়ার পায়তারা করছে। টাকার জন্য এখন অসহায় দিন যাপন করছি।

জেলা শহরের বিজয় নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষা সানজিদা খাতুন জানান,জমি বিক্রি করে টাকা জমা রেখেছিলাম মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থায়। সেখান থেকে মাসে মাসে টাকা তুলে বেতন দিতাম। কিন্তু কয়েকমাস থেকে টাকা আত্মসাত করে পালিয়েছে এর মালিক পক্ষের লোকজন। এখন কলেজের বেতন দিতে পারছি না। মামলা হলেও আসামীদের আটক করা হচ্ছে না। জনগণের টাকা নিয়ে যে সমস্ত সম্পদ তৈরি করেছে,তা বিক্রি করে আমাদের টাকা ফেরত দিতে হবে।

নাচোল উপজেলার নেজামপুরের কাজল মুখার্জির স্ত্রী টুম্পা মুখার্জি বলেন, ২০১৯ সাল থেকে দিনমজুর স্বামীর জমানো টাকা রেখেছিলাম মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামের এনজিও-তে। জমি কেনার জন্য টাকা জমা টাকা না পেয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার মতো এলাকার হাজারো মানুষের অবস্থা এমন।

অন্যের জমিতে কাজ করে নিজের জমানো ও গরু বিক্রির ৭০ হাজার টাকা জমা রেখেছিলেন স্বামী হারানো পান মুনি (৬৫)। তিনি জানান, টাকাগুলো আবার ফেরত পেলে ভাঙ্গা ঘর ঠিক করতাম। কিন্তু কয়েকমাস থেকে টাকা দিতে নানারকম টালবাহানা শুরু করেছে। এখন তো তাদের অফিসও বন্ধ রয়েছে। শুনেছি, এনজিও মালিক মাসুদ রানা নাকি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে কারাগারে আরামে দিন পার করছি।

এবিষয়ে মধুমতি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) এসলাম হোসেন বলেন,এবিষয়ে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। গ্রাহকেরা মামলাগুলোর আসামীদের গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের বিষয়ে কি অবস্থায় রয়েছে,তা জানতেই গ্রাহক ও এনজিও কর্মীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সাথে কথা বলতে এসেছিলেন।

S M Rubel
S M Rubel
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি । মোবাইলঃ ০১৭৫৬-৯১১৯৪৬
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments