সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি:
চলতি বছরের শিক্ষাপঞ্জি সংশোধন করে শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ করেছেন। এতে শিক্ষকগণ বিদ্যালয়ে গেলেও কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই ক্লাসে। শহরাঞ্চল ছাড়া গ্রাম এলাকার প্রতিষ্ঠান গুলোতে অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুল মাদ্রাসায় যাচ্ছেন। এতে করে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে নতুনভাবে শিখন ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। জানা যায়, সরকারি নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটির তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। সেই সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার ছুটির তালিকা সংশোধন করে আগামী ২১ মার্চ ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো ১০ রোজা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে জেলার মহাদেবপুর, মান্দা, পত্নীতলাসহ কয়েকটি উপজেলার গ্রাম এলাকার স্কুল-মাদ্রাসা গুলো ঘুরে দেখা যায় কোন প্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেক আবার কোন প্রতিষ্ঠানে অর্ধেকের কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ক্লাসে যাচ্ছেন। রোজা শুরু হওয়ার পর দেশের তাপমাত্রা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এ বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোজা রেখে শিক্ষার্থীরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। একারণে অনেকে প্রতিষ্ঠানে আসছে না। যারা আসতেছে তাদের মধ্যে অনেকেই দুপুর হতে হতেই বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে উঠছে। যে শিক্ষার্থীরা রোজায় স্কুল মাদ্রাসার আসতেছে না তাদের মধ্যে করোনা কালীন সময়ের শিখন ঘাটতি পূরণ করতে নতুনভাবে শিখন ঘাটতি তৈরি হচ্ছে নতুন কারিকুলামের বিষয় গুলোর। এবিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থী সুমাইয়া, মীম, আব্দুর রহিম, সিহাবসহ আরও অনেকে বলেন, আমরা রোজা আছি। আমাদের কারো কারো বাড়ি থেকে প্রতিষ্ঠান ২/৩ কিলোমিটার দূরে। এই রোজার সময়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রতিষ্ঠানে এসেছি। এভাবে একেরপর এক ক্লাস চলায় অনেকটা অমনোযোগী হয়ে যাচ্ছি। আমাদের যে সব সহপাঠীরা ক্লাসে আসছে না তারা এই পাঠগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা এই বিষয়ে কিছুই শিখতে পারছে না। জানতে চাইলে নওহাটা মোড়ে এলাকার অভিভাবক শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন বলেন, আমার ছেলে এবার নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছে। আমার ছেলে নিয়মিত রোজা রাখছে। রোজা রাখলে সে অনেকটাই নারভাস হয়ে পড়েছে তাই তাকে রোজা রেখে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছি। জানতে চাইলে মহাদেবপুর উপজেলার সরস্বতীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সায়েম, পত্নীতলা উপজেলার সুবরাজপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোসাদ্দেক হাসান, মান্দা থানার আলালপুর হাজী শেখ আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু সাঈদ মন্ডলসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক বলেন, রোজার কারণে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থীই প্রতিষ্ঠানে আসছে না। তারা যদি প্রতিষ্ঠানে না আসে তাহলে আমরা কি করবো। যারা আসতেছে তারাও দুপুর হতে হতেই ছুটি ছাচ্ছে। এখন যেই শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানে আসছেনা তারা এই পাঠগুলো থেকে পিছিয়ে পরছে। এতে নতুনভাবে আরও শিখন ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। যা আর পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই কারণ একটি পাঠ তো আর শিক্ষার্থীদের মাঝে দুইবার করে উপস্থাপন করা যাবে না।