মোঃমাছুম আহমদ জুড়ী প্রতিনিধি।
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় কাউন্টার ট্যারেরিজম ইউনিটের জঙ্গি অভিযানে শিশুসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে জঙ্গি সন্দেহে উপজেলার জুগিটিলা গ্রামের একটি বাড়ীকে গতরাত থেকে ঘিরে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার (১২ আগস্ট) সকালে কাউন্টার ট্যারেরিজম ইউনিটের অভিযান পরিচালনা শেষে ১০ জন জঙ্গি ও তাদের সাথে থাকা ৩ শিশু আটকের বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান (পিপিএম বার)। আটক ১০ জনের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ৩ শিশু রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের জুগিটিলা গ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে একটি বাড়ী শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাত থেকে ঘিরে রাখে কাউন্টার ট্যারেরিজম ইউনিট ও পুলিশের একটি দল। দূর্গম এ পাহাড়ে জঙ্গি আস্তানায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, সিটিটিসি’র নেতৃত্বে সিটিআই বিভাগের একটি টিম সোয়াট অপারেশন “অপারেশন হিলসাইড” পরিচালনা করে।
পরে সকালে অভিযান শেষে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াট ও পুলিশের সদস্যরা শিশুসহ ১৩ জনকে আটক করে। আটককৃতের মধ্যে মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ৩ জন শিশু রয়েছে।
অভিযানে আটককৃতরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার দক্ষিন নলতা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে শরীফুল ইসলাম (৪০), কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার কানলা গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে হাফিজ উল্লাহ (২৫), নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে
খায়রুল ইসলাম (২২), সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার মাইজবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে রাফিউল ইসলাম (২২), নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের খায়রুল ইসলামের স্ত্রী মেঘনা (১৭), মেয়ে আবিদা (১২ মাস), পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের আ: ছত্তারের স্ত্রী শাপলা বেগম (২২), মেয়ে জুবেদা (১৮ মাস), হুজাইফা (০৬), নাটোর জেলার সদর উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের সোহেল তানজীম রানার স্ত্রী মাইশা ইসলাম (২০), বগুড়া জেলার শরিয়াকান্দি উপজেলার
নিজবলাই গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ সানজিদা খাতুন (১৮), সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার দক্ষিণ নলতা গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী আমিনা বেগম(৪০), মেয়ে মোছাঃ হাবিবা বিনতে শফিকুল (২০),
অভিযান শেষে শনিবার সকালে পুলিশের বিশেষায়িত এ ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আটককৃত ১০ জনের বাড়ি দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তাদের সাথে তিন শিশুকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন ব্যাপকসংখ্যক লোকদের উগ্রবাদের দীক্ষা দিচ্ছে। শুরুতে আমাদের কাছে তথ্য ছিল মৌলভীবাজারের যেকোনো একটি পাহাড়ে তারা তাদের আস্তানাটি তৈরি করেছে। গতকাল আমরা চূড়ান্ত তথ্য পাই। ঢাকায় আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি, যিনি এ জঙ্গি আস্তানা থেকে তার পরিবারকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। সিটিটিসির প্রধান আরো বলেন, ‘বিনা বলপ্রয়োগে সিটিটিসি তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদের হেফাজতে নেয়ার পরে আমরা জঙ্গি আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ৫০টির মতো ডেটোনেটর উদ্ধার করি, যা দিয়ে গ্রেনেডসহ হাই এক্সপ্লোসিভ তৈরি করা হয়। ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, কমব্যাট বুট, বক্সিন ব্যাগ ও কয়েক বস্তা উগ্রবাদী বই জব্দের কথাও জানান সিটিটিসির প্রধান। অভিযান শেষে বিস্ফোরক সমূহ ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটি একটি নতুন সংগঠন। এর নাম ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’। এ সংগঠনের যে মূল ব্যক্তি, তার নামও আমরা পেয়েছি। আশা করি, তার পর্যন্ত পৌঁছাতে আমরা সক্ষম হব।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি এলাকায় জায়গা কিনে আস্তানা বানিয়েছেন জঙ্গিরা এমন তথ্য ছিল পুলিশের কাছে। জঙ্গিদের এ আস্থানা নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবদ কাজ করার পর নিশ্চিত হয়ে বাড়িটিতে অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াট ও পুলিশ।
এ বিষয়ে কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল হোসেন আজাদ জানান, শুক্রবার (১১ আগষ্ট) সন্ধ্যা থেকে উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের পূর্ব টাট্টিউলি গ্রামের জুগি টিলায় অবস্থিত একটি বাড়ির চারপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। পরে শনিবার সকালে অভিযান শেষে
কাউন্টার ট্যারেরিজম ইউনিটের জঙ্গি অভিযানে শিশু সহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান (পিপিএম বার) অভিযানে ১০ জঙ্গি আটকের পাশাপাশি ৩ শিশুকে হেফাজতে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সেলিম খান, নির্বাহী সম্পাদকঃ শেখ রবিউল ইসলাম আজম। যোগাযোগঃ ০১৮১১-২০২৫৩৩
বিঃদ্রঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি নিজস্ব একাউন্ট থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে, যে-কনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।