লোহাগাড়ায় র্যাব-৭ এর অভিযানে সহযোগী সহ ডাইল ফুরকান গাজা ও বিদেশী মদসহ গ্রেফতার
এম ডি বাবুল চট্রগ্রাম
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন একটি ভাড়া বাসার ৪র্থ তলার রুমের ভিতরে অবৈধ মাদকদ্রব্য মজুদ করে ক্রয়-বিক্রয় করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ২২ মে ২০২৩ ইং তারিখ ০১:৩০ মিনিটের দিকে বর্ণিত স্থানে অভিযানে পরিচালনাকালে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র্যাব সদস্যরা আসামী মোঃ ফোরকান (৪০), পিতা- মৃত এনায়েত আলী, সাং- জোনাবিরপাড়া, থানা- লোহাগাড়া, জেলা-চট্টগ্রাম এবং এহসানুল আলম (৫৫), পিতা- মৃত এস্তাফাজুর রহমান, সাং-০১ নং ওয়ার্ড, থানা- লোহাগাড়া, জেলা- চট্টগ্রামদ্বয়কে আটক করে। ধৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, উক্ত বাসার পূর্ব পাশের রুমের ভিতরে অবৈধ মাদক (ফেন্সিডিল, বিদেশী মদ ও গাঁজা) রয়েছে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীদের দেখানো মতে ০১টি খাকি রঙের কাগজের কার্টুন ও ০৭টি প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর হতে ৬৪ কেজি গাজা, ৩২৩ বোতল ফেন্সিডিল ও ৬ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরবাইকও জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ ফেনী জেলার সীমান্ত এলাকা হতে পরস্পর যোগসাজসে বিদেশী মদ, ফেন্সিডিল ও গাঁজা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন স্থানে খুচরা ও পাইকারী মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্যের আনুমানিক মূল্য ১৩ লক্ষ টাকা।
উল্লেখ্য, গত ১৭ মার্চ ২০২৩ইং তারিখে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম কর্তৃক সাতকানিয়া-লোহাগাড়া এলাকার কুখ্যাত মাদক গ্যাং ফোরকান সিন্ডিকেট এর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে উক্ত সিন্ডিকেটের সাথে সম্পৃক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের আস্তানা হতে উল্লেখযোগ্য পরিমান মাদক উদ্ধারসহ ৩জনকে আটক করা হয়। তবে সিন্ডিকেট প্রধান ফোরকান @ডাইল ফোরকান পলাতক থাকে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত সিন্ডিকেট প্রধানকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে ফোরকান ও তার কিছু সহযোগী মিলে নতুন আস্তানায় বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান মজুদ করেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রামের চৌকস আভিযানিক দল দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করে ডাইল ফোরকানের বর্তমান আস্তানাটি চিহ্নিত করতঃ ফোরকান ও তার সহযোগীসহ বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ ফোরকান এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানায় ০৪টি এবং সাতকানিয়া থানায় ০২টিসহ সর্বমোট ০৬টি মাদকদ্রব্য আইনে মামলা পাওয়া যায়। তবে সে অত্যন্ত ধূর্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পালিয়ে যায় অথবা দ্রুত জামিনে বের হয়ে পুনরায় মাদক ব্যবসা চালু করে। ফোরকান তার মাদক ব্যবসা আড়াল করার উদ্দেশ্যে লোহাগাড়ার আমিরাবাদ এলাকায় পার্টনারশিপ এ ১টি গাড়ির গ্যারেজ এর ব্যবসা ও পুরাতন গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিল। এছাড়াও সে হুন্ডি ব্যবসার সাথে জড়িত। সে সরাসরি ভারত হতে গাঁজা, ফেন্সিডিল এর চালান নিয়ে এসে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সরবরাহ করতো বলে জানায়। ভারত এর ডিলারকে হুন্ডির মাধ্যমে পাওনা টাকা পরিশোধ করতো। এছাড়াও মাদক ব্যবসা করে সে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছে। ফোরকান নিজের ও তার স্ত্রীর নামে একাধিক ব্যাংক একাউন্টে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ জমা করেছে বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।