মামুন উর রশিদ রাসেল বিশেষ প্রতিনিধিঃ নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার আকাশকুড়ি দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী মৌলভী শিক্ষক জমশেদ আলী। ১৯৭৯ ইং সালে ডিমলা নিজ পাড়া কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরিক্ষাযয় অংশ নিয়ে কম্পালমেন্টাল (সি) লাভ করেন। যার রোল নং ২৭৯২। কিন্তু পরিক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় দাখিল পাশের জাল সনদ তৈরি করেন জমশেদ আলী। যাহার জাল সনদের রোল নং ২১৮৪। সুকৌশলে সুযোগ বুঝে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জাল সনদে দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে শিক্ষগতা করছেন জমশেদ আলী। পরিক্ষায় পাশ না হওয়ায় অভিনব কায়দায় তৈরি করেন জাল সনদ। পরে সেই সনদের দৌলতে আলিম ও ফাজিল পাশ করেন ঐ শিক্ষক। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ একটা থাকলেও এমপিও ভুক্তির নথিপত্রে পাওয়া গেছে ভিন্ন তারিখ। উচ্চতর বেতন স্কেল পেতে বিএড সনদও জাল করেন তিনি। এসব জাল সনদে চাকুরি নিয়ে সরকারের কোষাগার থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। এ ঘটনায় শিক্ষর্থী অভিভাবক ও সচেতন ব্যক্তিরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপরদিকে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াছির আরফিন। এরপর জেলার জলঢাকা উপজেলার গুলমুন্ডা ফাজিল মাদরাসা থেকে আলিম পরিক্ষায় তৃতীয় বিভাগ ও ফাজিল পরিক্ষায় তৃতীয় বিভাগে পাশ করেন। পরে জমশেদ আলী স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে কমিটির মাধ্যমে সনদবিহীন যোগ্যতায় ২৭ মে ১৯৮৯ ইং সালে সহকারী মৌলভী শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ করেন। এখানেই থেমে থাকেনি জমশেদ আলী। ২০০৮ ইং সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের অধিনে বিএড’র জন্য কোন রেজিস্ট্রেশন করেননি। অথচ বিএড পরিক্ষায় পাশের আরও একটি জাল সনদ তৈরি করেন তিনি। এই বিএড সনদের মাধ্যমে গত নভেম্বর ২০১২ ইং সালে উচ্চতর বেতন স্কেলে অর্ন্তভুক্ত হন। যার জাল বিএড সনদের আইডি নং ০৮-০-০-৮১২-১৩৮। এছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর জন্ম তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ সাল থাকলেও এমপিও শীটে নতুন জন্ম তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪ উল্লেখ রয়েছে। জমশেদ আলীর শিক্ষকের ইনডেক্স নং- আর২৪৮৯২৬। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক সংবাদ দাতাকে কে জানান, “জাল সনদে শিক্ষকতা পেশায় চাকুরি করাটা লজ্জাজনক! তৎকালীন সময় প্রচুর অর্থের বিনিময়ে কমিটি তাকে নিয়োগ দিয়েছে। তবে এই নিয়োগে সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তার যোগসাজসে তার নিয়োগ বহাল থাকে। তাঁরা কি এসব সনদ যাচাই করেন না? তাহলে এসব অনিয়ম দেখা শুনার দায়িত্ব কার? এদিকে এলাকার সচেতন মহল ও শিক্ষার্থী অভিভাবকরা সহকারী মৌলভী শিক্ষক জমশেদ আলীকে বরখাস্ত করাসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। দাবিগুলো হচ্ছে- বেতন হিসেবে হাতিয়ে নেওয়া সরকারের লাখ লাখ টাকা ফেরত নেওয়া, জাল সনদ তৈরির অপরাধে জেল জরিমানাসহ তাঁকে শিক্ষগতা পদ থেকে বরখাস্ত করা। অভিযুক্ত সহকারী মৌলভী শিক্ষক জমশেদ আলী বলেন, “আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যে। আমি যদি দাখিল পরিক্ষায় পাশ না করে থাকি তাহলে ওনারা (বোর্ড কর্তৃপক্ষ) আমাকে সার্টিফিকেট দিয়েছেন কিভাবে? আমার বিরুদ্ধে কোন একটি মহল ষরযন্ত্র করছে।” এবিষয়ে নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম প্রতিবেদক কে বলেন, এ সম্পর্কে আমার জানা নাই। আমাকে একটু সময় দেন, জমশেদ আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু পরবর্তীতে আবারো যোগাযোগ করা হলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ সেলিম খান, নির্বাহী সম্পাদকঃ শেখ রবিউল ইসলাম আজম। যোগাযোগঃ ০১৮১১-২০২৫৩৩
বিঃদ্রঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি নিজস্ব একাউন্ট থেকে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারে, যে-কনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।