সুমন কুমার ঘোষ বুলেট নওগাঁ জেলাঃ উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর মহাদেবপুর। তবে উপজেলার তিন ফসলি জমিতে এখন পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। গত দুদশকে পুকুর খননের কারণে এখানে ফসলি জমি কমেছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর। মূলত এক শ্রেণির পরিবেশ ও সমাজবিরোধী মাটি ব্যবসায়ী এলাকার সহজ সরল মানুষকে পুকুর খননে উৎসাহিত করছে। তবে রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে প্রশাসন।
অভিযোগ রয়েছে, গত ৩ নভেম্বর সকালে উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিটল কবিরাজ, অতুল কবিরাজ, প্রতুল কবিরাজ, খোকন কবিরাজ ও সঞ্জয় কবিরাজ তাদের প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ভেকু মেশিনের মাধ্যমে পুকুর খনন শুরু করে। শাহিন আলমসহ উপজেলার ১৪ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি ওই পুকুর খননের মাটি ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। এসব মাটি ব্যবসায়ী আমন মৌসুমে কৃষকের ধান ঘরে তোলার আগেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখছে এবং সহজ সরল মানুষের ধান চাষ না করে পুুকুর খননে উৎসাহিত করছে। তারা কৃষকদের বোঝাচ্ছে ধান চাষের চেয়ে পুকুর খননে লাভ বেশি। খননকৃত মাটিও কৃষকরা বিক্রি করতে পারবে। মাটি ব্যবসায়ীদের এমন প্রলোভনে গ্রামের মানুষরা তিন ফসলের জমিতে পুুকুর খনন অব্যাহত রেখেছে। পুকুর খননের এসব মাটি জেলার বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছে শাহিন আলম ও তার সহোযোগিরা। আর এসব মাটি পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক্টর (কাঁকড়া) এবং ১০ চাকার ডাম্পার ট্রাক অবৈধভাবে জেলার আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যবহার করছে। এতে সড়কে যানজট সৃষ্টিসহ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, ৩৯৭ দশমিক ৬৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ উপজেলায় ৩০৭টি মৌজা এবং ২৯৮টি গ্রামে ৩০ হাজার ৩৫০ হেক্টর তিন ফসলি কৃষি জমি রয়েছে। তবে উপজেলার ১০ ইউনিয়নে গত দু’দশকে পুকুর খননের ফলে জমি কমেছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর।
তবে এ পরিসংখ্যানের সত্যতা অস্বীকার করে মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোমরেজ আলী জানান, এ পরিসংখ্যান ত্রুটিপূর্ণ।
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, তিন ফসলের জমিতে যেভাবে পুকুর খনন শুরু হয়েছে তাতে করে নওগাঁ জেলা দ্রুত খাদ্য ঘাটতিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এই জেলা যাতে খাদ্য ঘাটতিতে না পড়ে সে বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক, মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের বিষয়ে প্রশাসন কেন নীরব এমন প্রশ্নে মহাদেবপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুসরাত জাহান জানান, সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে পুকুর খননের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন তিনি।
নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।
৩ ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন, প্রশাসন নীরব : মহাদেবপুর
RELATED ARTICLES