মোঃ নাজমুল ইসলাম, ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে উপজেলা পরিষদ কার্যালয় মাঠে গ্রীষ্মকালীন ৫১তম আন্তঃউপজেলা ক্রীড়া প্রতিযোগীতার কাবাডির ফাইনাল ম্যাচে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইউএনও, স্কুল শিক্ষকসহ মোট ১২ জন আহত হয়েছে। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা।
৮ অক্টোবর (মঙ্গলবার) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা কার্যালয় মাঠে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ প্রতিযোগীতার শেষ দিনের কাবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ধারালো চাকুসহ আটক মোঃ শিশির উপজেলার পিয়ারপুর এলাকার মোঃ শাকিল এর ছেলে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন- ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ, সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালাম, ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ তৌফিক ইসলাম, মোঃ শুভ, ভাড়ইমারী রিয়াজ উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র সালমান হোসেন, সিয়াম, রুদ্র হোসেন, নাঈম ইসলাম, স্বাধীন, নবম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত আলী, নাহিদ হোসেন, নূর মোহাম্মদ। খেলা দেখতে এসে হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের এইচএসসি (১ম) বর্ষের ছাত্র মোঃ নাঈম ইসলাম।
জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন আন্তঃউপজেলার স্কুল, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে দাবা, কাবাডি এবং সাঁতার প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহনের মধ্যদিয়ে উপজেলায় তিন দিনের ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতার আজ শেষদিনের কাবাডি খেলার ফাইনালে অংশগ্রহন করেন উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারী রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং সাঁড়া ইউনিয়নের সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। খেলা চলাকালীন সময়ে সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধরে রাখা নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা সৃষ্টি হয় । বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এসময় সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল কালামকে মারধর করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপজেলার প্রধান ফটক অবরোধ করে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। সে সময় বহিরাগত কিছু শিক্ষার্থী লাঠিশোটা হাতে অবরোধ করতে আসলে শিক্ষার্থীরা ভয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়সহ আশপাশের বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নেয়। উপজেলা প্রসাশনের ভবনের কলাপসিবল গেট বন্ধ থাকায় আক্রমনকারীরা অফিসের বাইরের গ্রীল বেয়ে দোতলা এবং তিনতলায় যায় এবং শিক্ষার্থীদের মারধরসহ নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ভাংচুর করেন। সে সময় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা কার্যালয় জুড়ে। এসময় আটক শিশিরের ছুড়ির আঘাতে রিয়াজ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবীর কুমার দাশ বলেন, আন্তঃ উপজেলা কাবাডির ফাইনাল খেলায় শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্বন্দ্ব হয়েছে। সেই জেরে তারা আমার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালিয়েছে। ধারালো চাকুসহ বহিরাগত এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। তবে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় কাবাডি খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজনকে ধারালো চাকুসহ আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।