মামুন উর রশিদ রাসেল বিশেষ প্রতিনিধি: নীলফামারীর জেলার ডিমলা উপজেলায় জাল দলিল চক্র ও ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার বাবুরহাট বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ,মহুবার হোসেন, মশিয়ার রহমান, ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমানসহ ক্ষতিগ্রস্ত ও সচেতন নাগরিক। বক্তারা বলেন, জাল দলিল চক্রের মূলহোতা মাজেদুল-রনজিৎ- হাফিজুল- ময়েন গং।তারা জাল কাগজ তৈরি করে এলাকার নিরীহ মানুষের জমি দখলে নিয়ে ভোগদখল ও বিক্রি করছে। প্রতিবাদ করলে উল্টো মারধর করে এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা প্রকার হয়রানি করে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের সহায়তা চান এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ বলেন, ভূমিদস্যুরা জাল দলিল,রেকর্ড জালিয়াতি ও পর্চা তৈরি করে নিরীহ মানুষের শতশত বিঘা জমি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে। টাকার বিনিময়ে জাল দলিল বানিয়ে অন্যকেও জমি দখল করার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।মোটা অংকের টাকা দাবী করে এ প্রতারক চক্রটি প্রকৃত ভূমি মালিকদের একের পর এক মিথ্যা মামমলাসহ প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছে।প্রভাবশালী হওয়ায় এই চক্রের বিরুদ্ধে জাল দলিলের মামলা করেও লাভ হচ্ছে না। ইউপি সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, আমার ক্রয়কৃত ৭একর সম্পতি জাল দলিল করে জোরপূর্বক ৫ বছর ধরে দখল করে খাচ্ছে ভূমিদস্যুরা। আমার মতো অনেকের জমি-জমা এভাবে জোর করে খাচ্ছে তারা। মহুবার হোসেন বলেন,ভূমির সব পর্যায়ের জাল কাগজপত্র, স্ট্যাম্প, সিলমোহর আছে তাদের কাছে। এমনকি জাল স্ট্যাম্প, ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নামে নকল করা সিল ও জাল স্বাক্ষরের ব্যবস্থাও আছে এই চক্রের কাছে। একইসঙ্গে পুরোনো দিনের বিভিন্ন আমলের স্ট্যাম্পও আছে জাল দলিল চক্রের হাতে। তাদের এই কাজে রংপুর সাব রেজিস্টার অফিসের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত বলেন তিনি। ভুক্তভোগীরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে জানিয়ে ভুক্তভোগি পরিবার ও এলাকার সচেতন নাগরিক সমস্যার সমাধানে প্রশাসন ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছে। মানববন্ধন শেষে ভূমিদস্যু ও জালিয়াতি চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বারকলিপি প্রদান করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তদের একজন হাফিজুল ইসলাম বলেন, এসব মিথ্যা বানোয়াট। আমি রনজিৎ ভুইমালীর কাছে জমি কিনেছি । রনজিৎ ভুইমালীর সাথে অনেকের জমিজমা নিয়ে বিরোধপূর্ন মামলা চলছে ।তারাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে আমাদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, সম্প্রতি ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ আমলের শতাধিক সরকারি স্ট্যাম্প ও দলিল জাল করার উপকরণসহ বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের জাল সই-সংবলিত ১৬৫টি সিলসহ জাল চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমরা সবসময়ই এর বিরুদ্ধে কঠোর। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। খুব শীঘ্রই এই পুরো চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।