Tuesday, September 16, 2025
spot_img

নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।

HomeUncategorizedশহীদ জননী জাহানারা ইমাম-এঁর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম-এঁর জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা

এসএম রুবেল,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

জাহানারা ইমাম ছিলেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংগঠক। মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিবেদিত করেন। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারে আনার জন্য তাঁর প্রচেষ্টা ছিল অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ সময়ের ডায়রি একাত্তরের দিনগুলি এক অনন্য সৃষ্টি।
১৯২৯ সালের ৩মে অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে জাহানারা ইমাম জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পিতা আবদুল আলীর তত্ত্বাবধানে তিনি রক্ষণশীলতার বাইরে এসে আধুনিক শিক্ষা শুরু করেন। তাঁর স্বামী ইঞ্জিনিয়ার শরীফ ইমামও তাঁকে লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। ১৯৪৫ সালে কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন। বিএড পাস করার পর তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এমএ পাস করেন।
তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতার মাধ্যমে। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। এরপর ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে তিনি আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে তা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছেলে রুমী ও স্বামীকে হারান। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তার কেটেছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ত্রাসের মধ্য দিয়ে। এসময় তাঁর মনের মধ্যে ছিল দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন। এ দুঃসময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের এসব বৃত্তান্ত তিনি দিনলিপি আকারে নানা চিরকুটে, ছিন্ন পাতায় ও গোপন সঙ্কেতে লিখে রেখেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের এ দিনলিপি তিনি ১৯৮৬ সালে একাত্তরের দিনগুলি নামে প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক মর্মস্পর্শী এ বৃত্তান্ত জনমনে ব্যাপক সাড়া জাগায়।স্বাধীনতার পর জাহানারা ইমাম লেখালেখি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত সময় কাটান। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ছেলে রুমীর আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধে তার অবদানের কারণে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে শহীদ জননী হিসেবে। তিনি বিভিন্ন সভা-সমিতিতে মুক্তিযুদ্ধের ঘাতক ও দালালদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে জনমত সংগঠিত করতে শুরু করেন। ১৯৯২ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক হন। এসময় একাত্তরের ঘাতক ও দালালদের বিচারের দাবিতে গড়ে তোলা হয় গণআদালত।

তাঁর রচিত প্রধান কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে অন্য জীবন(১৯৮৫), বীরশ্রেষ্ঠ(১৯৮৫), জীবন মৃত্যু(১৯৮৮), চিরায়ত সাহিত্য(১৯৮৯), বুকের ভিতরে আগুন(১৯৯০), নাটকের অবসান(১৯৯০), দুই মেরু(১৯৯০), নিঃসঙ্গ পাইন(১৯৯০), নয় এ মধুর খেলা(১৯৯০), ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস(১৯৯১) ও প্রবাসের দিনলিপি(১৯৯২)।
মৃত্যুর আগে জাহানারা ইমাম মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রমে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন আমেরিকার মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েট শহরের হসপিটালে তিনি মারা যান।
আজকে শহীদ জননীর জন্মবাষিকী উপলক্ষে তাঁকে আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।

S M Rubel
S M Rubel
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি । মোবাইলঃ ০১৭৫৬-৯১১৯৪৬
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments