পুলিশ হত্যার সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ১০ বছর পলাতক থাকার পরে র্যাব-৭ এর জালে ধরা
এম ডি বাবুল চট্রগ্রাম
গত ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখ রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর অক্সিজেন এলাকায় সরকারী দায়িত্ব পালন শেষে আগ্রাবাদ সিএন্ডবি কলোনি এলাকার নিজ বাসায় ফিরছিলেন কনস্টেবল ফরিদ উদ্দিন। এ সময় কতিপয় ছিনতাইকারীরা তার পথরোধ করে মালামাল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হন পুলিশ সদস্য ফরিদ। পরে গুরুত্বর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ সদস্য ফরিদকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ডবলমুরিং থানার তৎকালীন এসআই আমিনুল হক বাদী হয়ে উক্ত হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন, যার নং-০৭; ১৪ জানুয়ারী ২০১৪ তারিখ, ধারা-৩৯৬; পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত মামলায় ডাবলমুরিং থানা পুলিশ কর্তৃক অভিযান চালিয়ে ০৬ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেন। এদের মধ্যে ধৃত আসামী অটোরিকশা চালক মনির ছিলেন উক্ত হত্যার ঘটনার অন্যতম সহযোগী। পুলিশ সদস্য ফরিদ’কে ছুরিকাঘাতে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা ঘটনার পর ছিনতাইকারীদের পালিয়ে যেতে ধৃত আসামী মনির তার অটোরিকশার মাধ্যমে সাহায্য করেছিলেন। ডবলমুরিং থানা পুলিশ কর্তৃক আটক ০৬ জন আসামীর মধ্যে মোঃ নাছির ও মোঃ রাজিব নামে দুজন আসামি মামলা তদন্তের সময় মারা যান। পরবর্তীতে বাকি চারজনকে আসামি করে গত ১৭ এপ্রিল ২০১৫. তারিখ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেন এবং গত ০৫ এপ্রিল ২০১৬. তারিখ বিজ্ঞ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কার্য শুরু করার জন্য আদেশ দেন।
গত ০৭ মে ২০২৩. তারিখ বিজ্ঞ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামী মোঃ বাবুদ দুলাল, অর্জুন দে এবং মোঃ মনিরের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি এবং ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযুক্ত পলাতক আসামী জসিম উদ্দিন রাজু, মো. মাবুদ দুলাল ও অজুন দেসহ ০৩ জনকে যাবজ্জীবনের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। অপরদিকে অটোরকিকশা চালক মনিরকে ১০ বছর কারাদন্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত পলাতক ০৩ জন আসামীদেরকে গ্রেফতারের লক্ষে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়াতদন্ত শুরু করেন। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলা সাথে জড়িত এজাহার নামীয় পলাতক অন্যতম আসামী মোঃ মনির চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন নয়াবাজার এলাকায় আত্মগোপনে আছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৫ মে ২০২৩. তারিখ আনুমানিক ৫:৩০ মিনিটের দিকে উল্লেখিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ মনির, পিতা- মৃত আঃ রশিদ, সাং-ফইয়াবাড়ী থানা- দেবীদ্বার, জেলা- কুমিল্লা এ/পি মনছুরাবাদ মিয়াবাড়ী, থানা-ডাবলমুরিং, জেলা- চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সামনে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, সে উল্লেখিত হত্যার ঘটনার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত এবং উক্ত মামলায় ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী বলে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।