Tuesday, September 16, 2025
spot_img

নোটিসঃ আমাদের সকল প্রতিনিধি পার্সোনাল একাউন্ট থেকে নিউজ পাবলিশ করে থাকে, যে-কোনো সংবাদের দায়ভার তারা নিজেরাই বহন করবে।

HomeUncategorizedলোহাগাড়ায় র‍্যাব-৭ চট্রগ্রাম এর অভিযানে শিশু হত‍্যাকারি আসামি গ্রেফতার

লোহাগাড়ায় র‍্যাব-৭ চট্রগ্রাম এর অভিযানে শিশু হত‍্যাকারি আসামি গ্রেফতার

লোহাগাড়ায় র‍্যাব-৭ চট্রগ্রাম এর অভিযানে শিশু হত‍্যাকারি আসামি গ্রেফতার

এম ডি বাবুল সি:বিশেষ প্রতিনিধি

২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে চট্টগ্রামের ভুজপুর এলাকায় বসবাসকারী মোঃ শাহ পরান এবং দেলোয়ারা বেগম পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর হতে শাহ পরান তাদের সংসারের অভাব অনটন এবং পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। দেলোয়ারা বেগম স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। শাহ পরানের ভগ্নিপতি আসামী মো: নাসির /নাসিম উক্ত বিয়ের ঘটক ছিলেন। দেলোয়ারা বেগম শাহপরানকে তালাক দেয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ পরান এবং মোঃ নাসির /নাসিম বিভিন্ন সময় তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত।

গত ০১ এপ্রিল ২০১০ ইং তারিখে দেলোয়ারা বেগম ও তার ১০ বছর বয়সী ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন রিকা মনি খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লে রাত আনুমানিক ৪: ঘটিকায় আসামী শাহপরান তার ভগ্নিপতি নাসির /নাসিমকে সহ দেলোয়ারা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে ঘরে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে শাহপরান ঘুমন্ত দেলোয়ারা বেগমের বুকের ডান পাশে চুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। এসময় দেলোয়ারা বেগমের চিৎকারে তার মা ও ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন ঘুম থেকে জেগে উঠে এবং আসামীদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে আসামী শাহপরান তার হাতে থাকা ছোরা দ্বারা ফারহানার পেটে নির্মমভাবে উপুর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে ভিকটিম ফারহানার নাড়ীভুড়ি বের হয়ে আসে এবং ঘটনাস্থলেই সে মৃত্যু বরণ করে। এ সময় ভিকটিমের মায়ের চিৎকারে তার ভাই এবং প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে আসামীরা তাদের হাতে থাকা ছোরা ও একটি ব্লেড ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত দেলোয়ারা বেগমকে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

পরবর্তীতে উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হতে চট্টগ্রাম জেলার ভুজপুর থানায় ০২ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ০১(০৪)২০১০ তারিখ ০২ এপ্রিল ২০১০, ধারা ৩০২/৩৪। মামলা চলাকালীন সময়ে আসামীরা বিজ্ঞ আদালতের নিকট হতে জামিন নিয়ে পলাতক হয়। দীর্ঘদিন পলাতক থাকায় ও কোর্টে হাজিরা না দেওয়ার আসামীদের অনুপস্থিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রæত বিচার ট্রাইবুনাল গত ০৯ এপ্রিল ২০১৯ইং তারিখে আসামী শাহপরানকে মৃত্যুদন্ড এবং আসামী নাসির /নাসিম যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজা প্রদান করে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।

গত ২৬ মে ২০২৩ইং তারিখে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার মৃত্যুদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ শাহ পরানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। কিন্তু বর্ণিত মামলার অন্যতম প্রধান আসামী মোঃ নাসির /নাসিম পলাতক থাকে। র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী নাসির /নাসিমকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে, বর্ণিত আসামী আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া থানাধীন চুনতি রেঞ্জ এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৮ মে ২০২৩ ইং তারিখে বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ নাসির /নাসিম (৪৫), পিতা-নুরু আহমদ, সাং-পূর্ব ভূজপুর, থানা- ভুজপুর, জেলা- চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, নাসির গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ছেড়ে পার্বত্য জেলায় চলে যায় এবং সেখানে সে বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং হোটেলে রান্নার কাজ করত। সে এক এলাকায় বেশিদিন অবস্থান করত না। সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে দীর্ঘ ১৩ বছর যাবৎ পার্বত্য জেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন পেশায় আত্মগোপন করে ছিল।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মোঃ বাবুল ্মিয়া
মোঃ বাবুল ্মিয়া
ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম জেলা। মোবাইলঃ ০১৮২১-৬৩৬২৩০
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments