মোহাম্মদ সাইদঃ ঢাকা রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘বিক্ষোভ প্রতিবাদ সমাবেশ’ করেন বিএনপি।বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের স্বপরিবারের বিরুদ্ধে ১/১১ অবৈধ সরকার কর্তৃক দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় বাতিলকৃত সাজা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিয়ে নেতা কর্মীরা জড়ো হন নয়াপল্টনে। হাতে হাতে রয়েছে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লে কার্ড ও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আসে দলটির নেতাকর্মীরা।
শনিবার ৩ জুন ২০২৩, দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সভার ১ম অধ্যায়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ, পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আর সময় নেই এ সরকারর। এদের পেছনে আজরাঈল দাঁড়িয়ে গেছে! আর পার পাবেন না।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ছিল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার। তারা এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে তারা কোর্টের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। এজন্য তারা দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের ব্যাবস্থা করেছে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে মিথ্যা রায় দিয়েছে সরকার। এরা আদালত ব্যাবহার করে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ পেতে চায়। এ আশায় গুড়ে বালি। সেটা কখনো হবে না। এ দেশের মানুষ সেটা কখনো হতে দিবে না। তিনি বলেন, মানুষ ভেবে ছিল বাজেট তাদের জন্য কোনো সুখবর থাকবে। কিন্তু ওই বিধিবাম। আল্লাহ করে এক, মানুষ ভাবে আরেক। সরকার মশকরা করছে। এটা নাকি গরিব বান্ধব বাজেট। যার আয় নেই তাকেও নাকি ২ হাজার টাকা আয়কর রিটার্ন দিতে হবে।‘এই হাইকোর্ট থেকেই আমান, টুকু খালাস পেয়েছিলেন, ওই মামলাগুলো উজ্জীবিত করে তাদের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে। একই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মায়াকে খালাস দেয়া হয়েছে। এরা কারা, এরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা।’সামনে কোরবানি ঈদ, একজন শ্রমিক বলছে আমরা একদিন গোশত খাইতে চাই, কিন্তু কিভাবে খাবে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আদা মসলা কিনবে কি করে। এই সরকার দেয়ালের লিখন পড়ে না। সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। এখন এরা সুবোধ সেজেছে। ভালো পোশাক পরে, এসি রুমে বসে থাকছে বলে দেশ নাকি সিঙ্গাপুর হয়ে গেছে।‘এদের এখন একটু মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে, ভিসা নীতি নিয়ে। মার্কিন বলেছে সুষ্ঠু নির্বাচন না করলে ভিসা থেকে বঞ্চিত হবেন।’মহাসচিব বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে, মাথা ফাটিয়ে এরা কি আমাদেরকে আটকে রাখতে পেরেছে? নেতাকর্মীরা তখন উচ্চস্বরে বলে না। এদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। আর সময় নেই সরকারের। এদের পেছনে আজরাঈল দাঁড়িয়ে গেছে আর পার পাবে না। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্হায়ী কমিটির সভাপতি, মির্যা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।সভাপতি ও উপস্হিত নেতারা বক্তব্যে বলেন, মানুষ বাজেট বোঝে না, মানুষ মাথা পিছু আয় বোঝে না। মানুষ বোঝে চালের দাম কমলো কি না? তারা সেটা বুঝে। আর কিছু বুঝতে চায় না। জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়েছে তারা পুলিশ বাঁচানোর জন্য। সব কিছু লুটপাট করে শেষ করেছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে ভয় পাচ্ছেন। আমাদের সিনিয়র নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চান। তা কি হতে দেয়া হবে? না। নেতাকর্মীরা বলে না। এই সরকার অবৈধ। আমরা বিচার মানি। কিন্তু গায়েবি মামলা দেয়া হয়। এটা কি মানা যায়। আওয়ামী লীগ বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিয়েছে। পুলিশ প্রশাসনকে নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা কালকেই এ সরকারের পতন চাই। সব কিছু দলীয়করণ করেছে আওয়ামী লীগ। তারপরও তার ভয় সামনে নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এটা বুঝে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। ওরা ভুয়া ভুয়া।এর আগে, সমাবেশের কারণে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় বন্ধ থাকায় জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন দেখা গেছে। সমাবেশে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশকে সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।