প্রকাশের সময় : ঢাকা, ২৮ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১২ জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ২৩ জিলহজ্ব ১৪৪৪ হিজরি,আপডেট : ০৮:৫০:৩৫ পিএম মোহাম্মদ সাইদ ( স্টাফ রিপোর্টার) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন দফা একটাই- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আর কোনো দফা নেই। সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ভোটাধিকার ফিরে দিতে হবে। |
সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৮-১৯ জুলাই দুদিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি। ১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে এবং ১৯ জুলাই শুধু ঢাকা মহানগরীতে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে।
বুধবার (১২ জুলাই) বিকেলে নয়া পল্টনে একদফা ঘোষণার সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। গণতন্ত্রের ঘাতক, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও সর্বনাশা অনাচারে লিপ্ত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ ধারায় বৃহত্তর গণ-আন্দোলনের একদফার যৌথ ঘোষণার জন্য সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
‘আমাদের সংবিধানের সবচেয়ে বড় যে জিনিস সেটি হলো মানুষের অধিকার। আর এই সরকার সেই অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সরকার উৎখাতের মধ্য দিয়ে সে অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেব।
ঘোষনায় তিনি বলেন, অবৈধ কর্তৃত্ববাদী ভোটাধিকার হরণকারী সরকারের পদত্যাগ আমাদের এক দফা দাবি। এছাড়াও নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্গঠন ও মিথ্যা গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করে সব রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঢাকায় দুই দিনের পদযাত্রা করবো আমরা।
তিনি আরো বলেন, ১৮ জুলাই ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ি পদযাত্রা করবে বিএনপি। এছাড়াও ওইদিন পুরো দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়েও পদযাত্রা করবে বিএনপি। ১৯ জুলাই শুধু ঢাকা মহানগরীতে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত উত্তরার আব্দুল্লাপুর থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।
ফখরুল বলেন, সরকার বলেছিলেন ১০ টাকা মূল্যের চাল খাওয়াবেন কোথায় সেই ১০ টাকার চাউল। বলেছিলেন বিনামূল্যের সার দেবেন কোথায় সেই সার।আজ সারের দাম বেড়েছে তিনগুণ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে মাত্র ২ কোটি টাকার মামলায় তাকে সাজা ভোগ করতে হচ্ছে। একটি মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর তাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। এই সরকার জীর্ণশীর্ণ কারাগারে রেখেছিল, তাকে ভালো চিকিৎসা পর্যন্ত দেয়নি। আমরা বাবারার তার চিকিৎসা বাইরের দেশে করানোর জন্য বলেছিলাম। পরিবার থেকেও বলা হয়েছিল। কিন্তু তাকে যেতে দেয়া হয়নি। এজন্যে তাকে বারবার হাসপাতালে যেতে হচ্ছে।
আজকে মানুষ শপথ নিয়েছে আর এই অন্যায় অবিচার নয় এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।যারা আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে তাদের অধীনে আর নয়। এই সরকারের কোন দায়বদ্ধতা নেই।
সংসদে এমন আইন পাস করা হয় যে আইনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে। এখানে জনগণের জন্য কোন কাজ করা হয় না। এখন আর কথা বলানোর সময় নাই।এখন আমাদের একটাই কাজ-এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের আন্দোলনে নেমে আসা।’
এখন একটাই কথা সেটি হল এই অবৈধ লুটেরা সরকারের পতনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেয়া।
প্রকৃতপক্ষে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, ঝড় এলে বাঁশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। অনেক বাধা দিও আজকের সমাবেশ বানচাল করতে পারেনি। এই সরকার বাংলাদেশ বিরোধী সরকার, এই সরকার গণতন্ত্র বিরোধী সরকার, যে এ সরকার বাংলাদেশের জনগণ বিরোধী সরকার।
কর্মসূচি ঘোষণার পর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা একদফা আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচি। এতে যদি আঙ্গুলে ঘি না উঠে, তবে কিভাবে আঙ্গুলে ঘি তুলতে হয়, তা এ দেশের জনগণ ভালো করেই জানেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, হামলা করবেন মামলা করবেন। মিথ্যা ফরমায়েশি রায় দিয়ে সাজা দেবেন এটা হতে দেব না। অনেক সুযোগ দিয়েছি। আর সুযোগ পাবেন না। অনেক ডলার পাচার করেছেন। গত ১৫ বছরে অনেক জেলে পুরিয়েছেন, সাজা দিয়েছেন, তাতে কোনো লাভ হয়েছে? বিএনপি কখনো পিছু হটে না।
কর্মসূচি ঘোষণার পর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা একদফা আন্দোলনের প্রাথমিক কর্মসূচি। এতে যদি আঙ্গুলে ঘি না উঠে, তবে কিভাবে আঙ্গুলে ঘি তুলতে হয়, তা এ দেশের জনগণ ভালো করেই জানেন।
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, হামলা করবেন মামলা করবেন। মিথ্যা ফরমায়েশি রায় দিয়ে সাজা দেবেন এটা হতে দেব না। অনেক সুযোগ দিয়েছি। আর সুযোগ পাবেন না।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা সবাই রক্ত দিতে চাই জানিয়ে শেখ হাসিনাকে যেতে হবে, তবে তিনি কোন দেশে যাবেন, তা তিনি জানেন না। কোন দেশ তাকে পাসপোর্ট দেবে এ নিয়ে তিনি অস্থিরতায় আছেন। এখন আপনাদের গায়ে একটা আঘাত এলে পাল্টা দু’টা আঘাত করবেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহাজান ওমর, ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মোহাম্মদ শাহজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, জয়নুল আবেদিন, নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কামরুজ্জামান রতন, ফজলুল হক মিলন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসে বদলে সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।