প্রকাশের সময় : ঢাকা, শুক্রবার ১৩শ্রাবণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ,০৯মহরম, ১৪৪৪ হিজরি,আপডেট : ০৮:৪০:৩৫ পিএম
মোহাম্মদ সাইদ (স্টাফ রিপোর্টার): শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টার পরে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিএনপির মহাসমাবেশের শুরু হয়।
বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল এই আওয়ামী লীগ। জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে তার আদর্শ গণতন্ত্রকে বিলীন করতে চেয়েছিল, কিন্তু তারই উত্তরসূরী খালেদা জিয়া ৯০-এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে করেছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকের এই মহাসমাবেশ পরিবর্তনের মাইলফলকের বাংলাদেশ গড়ার সমাবেশ। এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আর আওয়ামিলীগ ১৫ বছর ধরে দেশকে একনায়কতন্ত্র বানিয়ে রেখেছে এই ভোট ডাকাতির স্বৈরচার সরকারের পতন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরবোনা। এই সরকার সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা নির্বাচন ব্যাবস্থা শেষ করে দিয়েছে। এদের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এক দফা, এক দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই সরকারের সময় নেই, সময় শেষ।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীরা সারাদেশ থেকে এসেছে। তারা হোটেল উঠেছে। কিন্তু এই সরকারের পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে প্রায় হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তাতে আমাদের থামাতে পেয়েছে? জনসমুদ্র থেকে এক হাজার মানুষ জেলে নিলে কি থামাতে পারবে? না। এবার জনগণ বেরিয়ে এসেছে, থামাতে পারবে না। থামাতে চাইলে একটাই কথা- পদত্যাগ করতে হবে।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হামলা-মামলা দিয়ে আমাদের থামানো যাবে না, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলন দমন করা যাবে না।’ আওয়ামী লীগ বলেছিল, ১০ টাকা সের চাল খাওয়াবে, কিন্তু এখন চালের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা। ঘরে ঘরে চাকরি দিবে কিন্তু এখন ২০ লাখ টাকা ঘুষ না দিলে চাকরি হয় না। আবার আওয়ামী লীগ না করলে চাকরি হয় না। আমাদের দেশের মানুষেরা কষ্ট করে ডলার রিজার্ভ বাড়ায় আর তারা তা বিদেশে পাচার করে। এরা অমানবিক সরকার।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ‘এ সরকারের প্রতি দেশের মানুষ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। বিএনপি কখনো সংঘাতের রাজনীতি করে না। আমরা সংঘাত এড়াতে গতকালের সমাবেশ আজ করছি। আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়েছে। সরকারকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। আমরা এ সরকারের প্রতি অনাস্থা আনছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকারকে নামাতে যুদ্ধের ময়দানে নামতে হবে। গণতন্ত্রের উদ্ধারের জন্য যারা থাকবে তাদের অবশ্যই যোদ্ধার সার্টিফিকেট দিতে হবে। এ বিষয়টি আমি তুলে ধরবো।’তিনি আরো বলেন, ‘কথা এক- শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ফয়সালা করতে হবে রাজপথে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আর খালেদা জিয়াকে কারো দয়ায় নয়, আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যে শেষ হলে তিনি নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন আজকে আপনাদের জন্য একটি চমক আছে তালো আমাদের প্রানপ্রিয় নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আপনাদের উদ্দেশ্য বক্তব্য রাখবেন এসময় নেতাকর্মীরা উল্লাসে মেতে উঠে।
অডিও কলে অপেন স্পিকারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন।নেতাকর্মীদের সাথে সালাম বিনিময়ে তিনি বলেন, প্রিয় ভাই ও বোনেরা আজকে দেশের গণতন্ত্র মুক্তিকামী সমগ্র বাংলাদেশের জনতা জেগে উঠেছে ।আজ পল্টনে লাখ লাখ মানুষ তার প্রমান।আজকে আপনারা এসমাবেশে উপস্হিত হয়েছেন এসমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ নয়।আজকের এসমাবেশ সমগ্র বাংলাদেশের তরুন, ছাত্র,যুবক, নারী শিশু সকল শ্রেনী পেশা মানুষের সমাবেশ, একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলার সমাবেশ।আজকের এ সমাবেশ সকল সাধারন মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সমাবেশ । আজকের সমাবেশ গনতন্ত্র ফিরিয়ে পাওয়ার সমাবেশ । আজকের সমাবেশ বাংলাদেশের সন্মানীত সাংবাদিক ভাইদের সমাবেশ যারা সত্য কথা তুলে ধরতে গিয়ে হত্যার স্বীকার হয়েছে নির্জাতিত হয়েছে তথা গণধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার সমাবেশ ।সেই সাংবাদিকরা যেন ভবিষ্যতে স্বাধীনভাবে লিখতে পারে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার সমাবেশ। এ সামাবেশ গনতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়া সমাবেশ এ অংগীকার করে ঘরে ফিরবেন উপস্হিত প্রিয় স্বাধীনতা মুক্তিকামী ভাই ও বোনেরা । উপস্হিত নেতাকের্মীরা কন্ঠস্বরে হা বলে অঙ্গীকার করেন।
মহাসমাবেশে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকত উল্লাহ বুলু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, মীর নাছির উদ্দিন, নিতাই রায় চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, মোহাম্মদ শাহজাহান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ভিপি জয়নাল, মিজানুর রহমান মিনু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস জাহান শিরিন, আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।