প্রকাশের সময় : ঢাকা,বৃহস্পতিবার,০২ ভাদ্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১৭ আগস্ট , ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ,২৯ মুহাররম,১৪৪৫ হিজরি,আপডেট : ০৮:৫০:৩৫ পিএম.
মোহাম্মদ সাইদ (স্টাফ রিপোর্টার): রাজধানীর কামরাঙ্গীচর থানার কোম্পানীঘাট এলাকার একটি বাসার টয়লেট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাতক স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০ ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০ এর লালবাগ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান।
তিনি বলেন, রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে স্বামীর হাতে গৃহবধু হত্যার ঘটনায় ঘাতক স্বামী সোহেল মিয়াকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বলে আমার স্ত্রী মেহেরুন নেছা মীম (১৮) পর পুরুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলতো এমন সন্দেহের জেরে হত্যা করেছি।
মঙ্গলবার(১৫আগস্ট)পরিবারের সদস্যরা ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করে। এ ঘটনায় নিহত মিমের মামা মো. কামাল (৪৮) কামরাঙ্গীচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে বুধবার রাতে গাজীপুর জেলার সদর থানার সালনা ইপসা উত্তর মোল্লাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘাতক সোহেলের বরাত দিয়ে সাইফুর রহমান আরও জানান, সোহেলের সঙ্গে নিহত মীমের তিন বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। সোহেল ও মীম দুজনেই স্থানীয় একটি কলম কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলো। মীমের পরপুরুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা যোগাযোগ রয়েছে এমন সন্দেহে প্রায় কলহ হতো। ফলে সোহেল প্রায়ই মীমকে মারধর করত। সোহেলের নির্যাতনের কারণে মীম আগেও শেরপুর আদালতে সোহেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
এরপরও তার ওপর নির্যাতন চালাত স্বামী সোহেল। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে স্বামীর বাড়ী ছেড়ে কামরাঙ্গীরচর থানার জামাল দেওয়ানের গলিতে নানির বাড়িতে চলে আসে। সেখানেই মীম ও তার মা মিলে নানীর সঙ্গে বসবাস করত।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, মীমকে হত্যার ১০ থেকে ১২ দিন আগে সোহেল কামরাঙ্গিচরে নানির বাসায় আসে। মীমকে আর কোনদিন কোন প্রকার নির্যাতন করবেনা বলে মীম ও তার পরিবারকে কথা দিয়ে নানির বাসায় বসবাস করতে থাকে। সেই সঙ্গে মীমকে হত্যার সুযোগ খুঁজতে থাকে। পরবর্তীতে গত ১৫ই আগস্ট দেড়টার দিকে সোহেল বাথরুমে গিয়ে মীমকে ডেকে বলে যে, তার কোমরের পিছনে বিষফোঁড়া উঠেছে। এই বলে কৌশলে মীমকে বাথরুমে নিয়ে গিয়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক পাশবিকভাবে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। পরে গাজীপুরের সালনা ইপসা এলাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। পরবর্তীতে র্যাব তাকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।