সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারে প্রবেশে সরু সড়ক সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। এ ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারকে ঘিরে নির্মিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের সংযোগ সড়ক। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনের অন্যতম একটি স্থান। ৭৭০ থেকে ৮১০ খ্রিষ্ঠাব্দের মধ্যে পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল এই বিহারটি নির্মান করেন। দক্ষিন এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম এ বিহারটিকে ১৯৮৫ সালে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়। এখানে প্রতি বছর প্রায় ৬ থেকে ৭ লক্ষ দেশী-বিদেশী দর্শনার্থী আসেন। কিন্তু অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে এসব দর্শনার্থীদের চরম র্দূভোগে পড়তে হয়। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের প্রবেশ পথ পাহাড়পুর বাজার থেকে বিহারের ১ নম্বর গেট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এত সরু ছিল যে বাস, মাইক্রোবাস নিয়ে আসা দর্শনার্থীদের যানযটে পড়ে চরম ভোগান্তি পহোতে হয়। এছাড়া এ রাস্তাটি এত আঁকাবাকা যে দর্শনার্থীদের চলাচলে মারাত্বক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ সমস্যার সমাধানের জন্য প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের চাহিদার প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রসস্ত রাস্তা নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে। বিহারের উত্তর পশ্চিম কোণ থেকে পাহাড়পুর বাজারের উত্তর পাশ পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রসস্ত রাস্তা তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। নওগাঁর সড়ক বিভাগ জেলা প্রশাসন ও ভূমি অফিসের সহায়তায় এ সড়কের নিশানা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। প্রসস্ত ও দৃষ্টিনন্দন এ রাস্তার পাশাপাশি ক্যাফেটেরিয়া, পর্যটকদের চলাচলের জন্য ফুটপাত, স্যুভেনির শপ, চালকদের জন্য বিশ্রামাগার, ভিআইপিদের জন্য বিশ্রামাগার ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধার সব কিছুই থাকছে এ প্রকল্পের ভিতর। নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৈৗশলী রাশেদুল হক বলেন, পাহাড়পুর ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহারের মত এমন ঐতিহাসিক নির্দশনে যেতে মরনখাদের মত রাস্তা পার হতে হয়, সেটি আমার জানা ছিল না। জীবনের প্রথম পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করতে গিয়ে বিষয়টি আমার নজরে আসে। এরপর বিহারের কাষ্টোডিয়ানের সহযোগীতায় প্রায় ৫শত মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি আন্তর্জাতিক মানের একটি সড়ক নির্মানের নকশা ও দাপ্তরিক সকল প্রক্রিয়া শেষ করেছি। এখন সড়ক নির্মানের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সবকিছু ঠিক ঠাক থাকলে চলতি বছরের মধ্যেই সড়কটির নির্মান কাজ শেষ হবে বলেও তিনি জানান। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের কাষ্টোডিয়ান মুহাম্মদ ফজলুল করিম বলেন, বৌদ্ধ বিহারটিকে দৃষ্টিনন্দন করার জন্য অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে সরু সড়ক ও প্রয়োজনীয় আবাসন ব্যবস্থা না থাকায় দর্শনার্থীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আধুনিক এ সড়কটি নির্মিত হলে এ দুটি সদস্যার মধ্যে একটি সমাধান হবে। জেলা প্রশাসক মোঃ গোলাম মাওলা বলেন, পর্যটক খাতকে এগিয়ে নিতে হলে আধুনিক মানের টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প নেই। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারকে ঘিরে এ সড়কটি নির্মিত হলে বিহারে আসা দর্শনার্থীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা দূর হবে।