কক্সবাজারে বন কর্মকর্তার হত্যার বিচারের দাবিতে চুনতিতে ধরিত্রী রক্ষায় সংগঠনের মানববন্ধন
এম ডি বাবুল সি:বি:প্রতিনিধি
কক্সবাজারের উখিয়া দোছড়ি বিট কর্মকর্তাকে পাহাড়খেকো কতৃক ডাম্পার চাপা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে চুনতি অভয়ারণ্য, ফরেস্ট বিট অফিস এলাকায় মানববন্ধন করেছে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং চুনতি রক্ষায় আমরা।
৩১ মার্চ ২০২৪, রবিবার ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের বিট কর্মকর্তা মোঃ সাজ্জাদুজ্জামান সজলকে ডাম্প ট্রাকের নিচে চাপা দিয়ে হত্যা করে পাহাড়খেকো চক্র। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে আজ ২ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার দুপুর ১২:০০ টায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতি অভয়ারণ্য, ফরেস্ট বিট অফিস এলাকায় “ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)” এবং “চুনতি রক্ষায় আমরা” এর পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদী মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
চুনতি রক্ষায় আমরা এর দপ্তর সম্পাদক, মোঃ আবু ইউছুফ কাউছারের সভাপতিত্বে সহসভাপতি, এহতেশামুল হক রোমেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)- এর কক্সবাজার জেলা শাখার যুগ্ন আহবায়ক তৌহিদ বেলাল। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)- এর পেকুয়া উপজেলা সদস্য সচিব দেলওয়ার হোসাইন, চকরিয়া উপজেলা আহবায়ক রেজা চৌধুরী, জাতীয় সংবাদ সংস্থার চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ইউনাইটেড কনজিউমার প্রোটেকশন লিগ্যাল রাইট ফাউন্ডেশনের ন্যাশনাল করডিনেটর চট্রগ্রাম বিভাগিয় সাধারন সম্পাদক মানবাধিকার কর্মী মোহাম্মদ বাবুল মিয়া প্রমূখ।
প্রতিবাদী এই মানববন্ধনে তৌহিদ বেলাল বলেন, আজকে মাটিখেকো, বনখেকোরা মোঃ সাজ্জাদুজ্জামানের মতো একজন সৎ, চৌকস বন কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। তারা দেশের আইনকে তোয়াক্কা না করে বন-পাহাড় ধ্বংস করে ফেলছে। এইসকল খুনিদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এর আগেও আমরা দেখেছি, মহেশখালীর বন কর্মকর্তা ইউসুফকে হত্যা করা হয়। সেই হত্যার আজও কোন সুবিচার দেশবাসী দেখেনি। আজকে এই সাজ্জাদুজ্জান হত্যার বিচার যদি না করা হয় তবে এই ধরনের অপরাধীরা আরো বড় ধরনের অন্যায়ের সুযোগ পেয়ে যাবে।
মোহাম্মদ বাবুল মিয়া বলেন, মোঃ সাজ্জাদুজ্জামান একজন বন যোদ্ধা ছিলেন। পরিবেশ-বন রক্ষার কাজে তিনি মাটিখেকোদের আতঙ্ক ছিলেন। উনি দেশের স্বার্থে পাহাড়ের মাটি রক্ষায় রাতে বের হয়ে পাহাড়ের মাটি কাটতে বাধা দিলে তাকে মাটিখেকোরা নির্মমভাবে হত্যা করে। আমরা এই পরিবেশ যোদ্ধাকে হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানাই্ আর সেই সাথে দোষীদের শাস্তি দাবি করি। আমরা এই মানববন্ধন থেকে অনতিবিলম্বে বন বিভাগকে শক্তিশালী করার দাবি জানাই। তাদেরকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র এবং জনবল দিয়ে সজ্জিত করার আহ্বান জানাই।
আলোচনায় দেলোয়ার হোসাইন বলেন, সৎ বন কর্মকর্তাদেরকে যদি এভাবে হত্যা করা হয় তাহলে সেটা আমাদের জন্য অনেক দুর্ভাগ্যজনক। আমরা ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং চুনতি রক্ষায় আমরা এর পক্ষ থেকে এ ধরনের অন্যায়ে তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।
রেজা চৌধুরী বলেন, এই মানবনন্ধন থেকে আমরা দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানাই যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এই ধরনের অপরাধ করার সাহস না করে।
আসরারুল হক আবদার বলেন, পরিবেশ রক্ষা করতে গিয়ে আমরা আর কোন হত্যাকান্ড দেখতে চাই না। আমরা অতিসত্ত্বর অপরাধীদের আইনে আওতায় আনার জোর দবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধন থেকে বন-পাহাড় রক্ষায় স্থানীয় পরিবেশপ্রেমী মানুষদেরকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়।