মামুন উর রশিদ রাসেল বিশেষ প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় গরুর ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উপজেলার আনাছে কানাছে ছড়িয়ে পড়েছে গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন ভাইরাস (পক্স)।পাশাপাশি মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে খুরারোগ। ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে ডোমার উপজেলায় এ যাবত মারা গেছে ৫শতাধিক গরু। আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার গবাদিপশু। এলাকায় ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় আতংকে রয়েছেন খামারি ও কৃষক। ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক না থাকায় সচেতনতা ও পরিস্কার পরিছন্নতাই একমাত্র প্রতিষেধক। ডোমার উপজেলা ছাড়াও গোটা জেলায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন যায়গায় গুটি গুটি হয়ে ফুলে উঠছে। পরে সেখানকার চামড়া উঠে যাচ্ছে। এরপর ধীরে ধীরে গরুটির খাওয়া বন্ধ হচ্ছে। কয়েকদিন পর গরুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এ ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক না থাকলেও অনেকে গ্রামের হাতুরে পশু চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হচ্ছেন। ফলে বিপদ আরও বাড়ছে। হাতুরে পশু চিকিৎকরা কিছু না বুঝে এন্টিবায়োটিক এবং ব্যাথার ইনজেকশন পুশ করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। এরফলে গবাদিপশু দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি গরু আক্রান্ত হয়েছে উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নে। ডোমার উপজেলায় এ যাবত ৫শতাধিক গবাদিপশু মারা গেছে।এরমধ্যে বাছুরের সংখ্যা বেশি। খুরারোগে আক্রান্তের লক্ষণ হলো গরুর মুখের মধ্যে ক্ষত দেখা দেয়। গরু কোনো কিছু খেতে পারে না। মুখ দিয়ে লালা ঝরতে থাকে। পায়ের খুরের মধ্যেও ক্ষত হয়। হাঁটাচলা করতে পারে না। ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ৭০থেকে ১০০জন আক্রান্ত গরুনিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরে।এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, খরা ও বর্ষা মৌসুমে এই রোগগুলো দেখা দিলেও এবার ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গবাদিপশু মারা যাচ্ছে।ল্যাম্পি স্কিন ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক না থাকায় আমরা পরিস্কার পরিছন্নতার উপর বেশি জোর দিচ্ছি। পাশাপাশি জ্বর ও ব্যাথার ঔষধ দিচ্ছি। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, ফ্রী ভেটেরিনারী মেডিকেল ক্যাম্প কার্যক্রম চলমান রয়েছে।মুলত মশা মাছির কামড়ে এ ভাইরাস ছড়াচ্ছে। ল্যাম্পি স্কিনের প্রতিষেধক হিসেবে পরিমান মতো খাবার সোডা, গুড়, নিমপাতার রস ও লবন মিশিয়ে স্যালাইন তৈরি করে খাওয়ানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া পল্লী পশু চিকিৎসকদের নিয়ে মিটিং করেছি। মশা মাছি থেকে রক্ষায় মশারী কিংবা কয়েল ব্যবহার করতে হবে। গবাদিপশু ও তাদের থাকার যায়গা সার্বক্ষণিক পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে হবে।