সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর এলাকার আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে একই গ্রামের মৃত আয়েজ উদ্দিনের পুত্র আব্দুস সালাম (৫০) কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদÐ ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ প্রদান করেন। মঙ্গলবার নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় প্রদান করেন। জরিমানার অর্থ ধর্ষণের শিকার নারীকে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌশলী মো. মকবুল হোসেন জানান, নওগাঁ জেলার ধামইরহাট উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর গ্রামের আট বছরের শিশুকে ২০১৯ সালের ৫ জুন ঈদের দিন বেলা দুইটার সময় রুটি ও সেমাই খাওয়ানোর কথা বলে আসামী তার শয়ন ঘরে নিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে ধামইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অবস্থার অবনতি হলে পরবর্তীতে জয়পুরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নাবালিকা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে উক্ত শিশুর বাবা একই দিন ধামইরহাট থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। তদন্ত শেষে একমাত্র আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০২২ সালে ৫ জুলাই মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৪ জুন তের জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন সমাপ্ত করা হয়। গত বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শ্রবন করা হয়। এরপর মঙ্গলবার রায় ঘোষণার জন্য ধার্য্য হলে আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার জনাকীর্ণ আদালতে আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করার আদেশ প্রদান করেন। আসামী পূর্ব থেকেই জেল হাজতে থাকায় তাকে সাজা পরোয়ানা পডরে শুনানো হয়। আসামী পক্ষে এ্যাডভোকেট মো. মামুনুর রশিদ মামলা পরিচালনা করেন।
একই আদালতে পৃথক মামলায় ১২ বছরের নাবালিকা শিশুকে অপহরণের দায়ে ১৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদÐ অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেছে নওগাঁ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার। অপহরণকারী নওগাঁ জেলার সদর উপজেলার চকচাপাই গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের পুত্র মো. সুমন হোসেন (২৫)। জরিমানার অর্থ ভিকটিম শিশুকে প্রদানের নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট ডাসনগর মলংশাহ দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার প্রবেশ দ্বারের ৩০ গজ দক্ষিণে আসামী সুমন জোর করে সিএনজি যোগে নাবালিকা উক্ত মাদ্রাসার ছাত্রীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানের উদ্দেশ্যে নিযয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২০ আগস্ট নাবালিকার বড় ভাই থানায় মামলা করলে থানা কর্তৃপক্ষ ভিকটিমকে উদ্ধার করে তার ভাইয়ের জিম্মায় দিয়ে দেয়। তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে আট জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ জনাকীর্ণ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মেহেদী হাসান তালুকদার আসামি মো. সুমন হোসেনকে চৌদ্দ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থ দন্ড অনাদায়ে তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পূর্ব থেকেই আসামী জেল হাজতে থাকায় সাজা পরোয়ানা মূলে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ কৌশলী এ্যাডভোকেট মো. মকবুল হোসেন ও আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট আবু জাইদ মো. রফিকুল আলম মামলা পরিচালনা করেন।