মামুন উর রশিদ রাসেল বিশেষ প্রতিনিধি: পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নে রাত দুই’টার সময় পরিবারের উপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। হামলার ফলে জায়েদা বানু (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু ও ৫ জন আহত হয়েছে। গভীর রাতে দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়নের ভাউলাগঞ্জ এলাকার তিস্তাপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। হামলায় একই পরিবারের জাহিদুল হক (৩৪), সাইদুল ইসলাম (৩০), হাসান আলী (২৩), শরীফ হোসেন (১৮), সুজাত আলী (৩৫), সুরেজা বেগম (৪০), মুলুক আলী (৫০) গুরুতর আহত হন। হামলার শিকার জায়েদা জায়েদা বেগম (৫০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। নিহত জায়েদা বেগম মুলুক আলীর স্ত্রী। আহত ব্যাক্তিদের প্রথমে দেবীগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জায়েদা বেগমের মৃত্যু হয়। এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা’র সময় একই গ্রামের ইসরাইল হোসেনের নেতৃত্বে একদল লোক মুলুক আলীর বাড়ীতে দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা চালায় । হামলাকারীরা জিআই তারের নেট(জাল) দিয়ে চারিদিক থেকে মুলুক আলীর বাড়ী ঘিরে ফেলে, মুলুক আলীর ঘর ভাংচুর করে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। মুলুক আলী ও পরিবারের সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য বাইরে বেরিয়ে এলে তাদের উপর সশস্ত্র হামলা করে। অগ্নিসংযোগে একটি ঘর সম্পূর্ণ ঘর ভস্মীভূত হয়। মুলুক আলীসহ পরিবারের ৮ সদস্য গুরুতর আহত হয়। মুলুক আলী প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফিরে এলেও পরিবারের বাকি সদস্যরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে সুরেজা বেগমের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানা যায়। এঘটনায় রাতে মুলুক আলী বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে দেবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি ইসরাইলকে (৫০) গ্রেফতার করেছে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঘটনার রাতে পুলিশ যথাসময়ে না এলে আরো বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারতো! স্থানীয়রা পুলিশের ভূমিকায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন, এবং খুনিদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান। দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল হোসেন জানান, রাত দুই’টার সময় ৯৯৯ থেকে পুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হলে, তার নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে এএসআই সুজন দেবনাথ ঘটনাস্থলে যায়। একই সময়ে ভাউলাগঞ্জ ও দেবীগঞ্জ সড়কে টইলরত এসআই গোলজার হোসেনের নেতৃত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদেরও সেখানে পাঠানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তাৎক্ষনিকভাবে আহতদের ভ্যানে তুলে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।