মো: সোহরাওয়ার্দী হোসেন ভাম্যমান প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জ :
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে একগুচ্ছ সমন্বিত প্রয়াস যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিপর্যার্যের সময় এ কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করে থাকে। এর ধারাবাহিকতায় গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের সহায়তা করার জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করিয়ে থাকেন। কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের সাহায্য করতে তাদের বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে থাকেন।
কিন্তু বেলকুচি প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে ২০ শ্রমিকের বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন করে সুকৌশলে ২ লাখ ৩২ হাজর টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: জহুরুল ইসলাম। ২০ জন শ্রমিক ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের উত্তরবানিয়াগাঁতী আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা। ২০জন শ্রমিকের টাকা উত্তোলন করার জন্য ভাঙ্গবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান ২০জন শ্রমিকের ২৯দিনের টাকা পরিশোধ করতে বারবার বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে অবগত করেন। বেলকুচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মজনু মিয়া ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে বলেন, কর্মসৃজনের সকল শ্রমিক টাকা পরিশোধ করা হয়েছে, কারও টাকা বাকী নেই।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলা ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের ভাঙ্গাবাড়ি কবরস্থানে মাটি ভরাট ও উত্তর চন্দনগাঁতী চান মাতব্বরের বাড়ি হতে মাসুদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মানের ৬০ শ্রমিক কাজ করেন। এর মধ্যে উত্তরবানিয়াগাঁতী গ্রামের আলতাফ হোসেনের পুত্র আব্দুল গফুর খান, আব্দুল হাকিম এর পুত্র সাইদুল ইসলাম, রোস্তম আলী পুত্র সোহরাব আলী খান, আব্দুল মান্নান এর পুত্র শরিফুল খান, তোতাব আলীর পুত্র মোশারফ হোসেন, বদিউজ্জমান এর মেয়ে ফিরোজা খাতুন, আলতাফ হোসেন এর পুত্র মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, ময়নাল এর মেয়ে রিপা বেগম, রমজান এর পুত্র মজনু মন্ডল, আবু সাইদ এর পুত্র সাইুল ইসলাম, ইউসুফ এর মেয়ে মায়া খাতুন, ইসমাইলের পুত্র আখিরুল ইসলাম, আলী সরকার পুত্র নুর ইসলাম সরকার, কাদের এর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম, আমিরুল ইসলাম েেময় পারভীন বেগম, শাহজাহান এর পুত্র চান মিয়া, রাজু খাতুন এর পুত্র খোদেজা খাতুন ও আকতার হোসেন পুত্র রফিকুল ইসলাম নিয়মিত কাজ করে ১ম কিস্তির টাকার তাদের স্ব স্ব বিকাশ এ্যাকাউন্টে দৈনিক ৪’শ টাকা করে ৪০দিনের মোট ১৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু ২য় কিস্তির সময় ২৯দিনের দৈনিক ৪’শ টাকা করে ১১ হাজার ৬’শ টাকা বিকাশ এ্যাকাউন্টে আসে না।
ভুক্তভোগী ২০জন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, ১ম কিস্তি টাকা দেওয়ার সময় যে বিকাশ এ্যাকাউন্ট নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো আমাদের ২০জন শ্রমিকের ২০টি বিকাশ এ্যাকাউন্ট ছিল। দ্বিতীয় কিস্তিতে যে বিকাশ এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছে, সেই বিকাশ এ্যাকাউন্ট আমাদের ২০জন শ্রমিকের না। ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে ২০জন শ্রমিকের বিকাশ এ্যাকাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করে ২ লাখ ৩২ হাজার টাকার আত্মসাত করেছে।
৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক খান বলেন, ২০জন শ্রমিক ১ম কিস্তির টাকা প্রত্যেকের বিকাশ এ্যাকাউন্টে ১৬ হাজার টাকা পৌছেছে। কিন্তু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ১১ হাজার ৬’শ টাকা তাদের বিকাশ এ্যাকাউন্টে পৌছে নাই। অফিস গিয়ে খোজ নিয়ে দেখতে পাই এই ২০জন শ্রমিকের নাম পরিবর্তন না করে শুধুমাত্র বিকাশ এ্যাকাউন্ট নাম্বার পরিবর্তন করে চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামের আত্মীয় স্বজনের বিকাশ এ্যাকাউন্ট নাম্বার বসানো হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তিনি আমাকে জানান, কর্মসৃজনের টাকা সকল শ্রমিকের বিকাশ এ্যাকাউন্টে চলে গেছে। আমার কিছুই করার নেই।
এবিষয়ে ভাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলামকে বারবার ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
বেলকুচি উপজেলা সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মজনু মিয়া বলেন, বিকাশ নাম্বার পরিবর্তনের এখতিয়ার ইউনিয়ন কমিটির। আমি বিকাশ নাম্বার।পরিবর্তন করতে পারি না। হয়তো চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন করে দিয়ে বিল সাবমিট করেছে।
বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া সুলতানা কেয়া বলেন, বিকাশ নাম্বার কিভাবে পরিবর্তন হল, এটা পিআইও কর্মকর্তা ভাল বলতে পারবে। তার সাথে কথা বলেন।