রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ।
মোঃ আজম খাঁন চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।
আজ ২৬ নভেম্বর(মঙ্গলবার )সকাল ১১টার দিকে চিন্ময় কৃষ্ণকে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করে। বেলা ১২টায় নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে তাকে উপস্থাপন করা হয়৷ এসময় চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এসময় আদালত প্রাঙ্গন ছিল কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে ঘেরা।
একই সাথে চিন্ময় কৃষ্ণকে করাগারে ডিভিশন ও ধর্মীয় বিধিবিধান পালনের সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী স্বরূপ কান্তি নাথ বলেন, ‘আমরা জামিন শুনানিতে বলেছি, এটি একটি ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কোনো কর্মকাণ্ড তিনি (চিন্ময়) করেননি। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন। উনাকে কারাগারে ডিভিশন সুবিধা দেওয়ার জন্য আদালত আদেশ দিয়েছেন।’
‘এছাড়া আমাদের আরেকটা আবেদন ছিল। উনি যেহেতু নিরামিষভোজী ও শাকাহারি, উনাকে যেন ধর্মীয় বিধিবিধান পালনের পূর্ণ সুযোগ দেওয়া হয়। আদালত সেটা মঞ্জুর করে কারা কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’
এদিকে শুনানি চলাকালে এজলাসের বাইরে আইনজীবীসহ বিপুল সংখ্যক তরুণ-যুবক জড়ো হন। তারা চিন্ময় কৃষ্ণের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। জামিন নামঞ্জুরের খবরে তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এর মধ্যেই চিন্ময় কৃষ্ণকে আদালত ভবনের দোতলা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন সবাই প্রিজন ভ্যানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন৷ এতে প্রিজন ভ্যান আটকে যায়। প্রায় ১৫ মিনিট আটকে থাকার পর চিন্ময় কৃষ্ণ ভ্যানের ভেতর থেকে হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য দেন।
তিনি সবাইকে শান্ত থাকার ও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ড না করার আহ্বান জানান।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ছিলেন সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আলোচিত সংগঠক। বর্তমানে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন। তবে সম্প্রতি সংগঠনটি তাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে।
সনাতনী জাগরণ জোটের ব্যানারে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জনসভার পর ৩০ অক্টোবর রাতে তাকেসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটকের পর ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।