প্রকাশের সময় : ঢাকা, সোমবার ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৩১ জুলাই, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ,১২মুহাররম,১৪৪৫ হিজরি,আপডেট : ০৮:৪০:৩৫ পিএম.
মোহাম্মদ সাইদ:(স্টাফ রিপোর্টার) সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই, এজন্য তারা পুলিশ প্রশাসন দিয়ে জুলুম করে বিএনপির আন্দোলনকে দমাতে চায় বলে প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর।
আজ সোমবার ৩১ জুলাই-২০২৩, বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন ২৯ জুলাই, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশের মহানগর ও জেলা সদরে জনসমাবেশ করছে দলটি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর বিএনপি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
এ সময় প্রধান অতিথি আরো বলেন, আমরা একটা ছোট কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিলাম; অবস্থান কর্মসূচি। অবরোধ, হরতাল, ঘেরাও কর্মসূচি তো দেইনি। তাতেই এ সরকার ভয় পেয়ে গেছে। তারা সন্ত্রাসী, পুলিশ, প্রশাসনের সব সংস্হা নামিয়ে আমাদের ওপর কি অমানবিক নির্যাতন করেছে।
তিনি আরও বলেন, এ সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই, এজন্য তারা এমন করে জুলুম করে যাচ্ছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে আটক করছে। এতে আমাদের কি থামতে পেরেছে। এনাফ ইজ এনাফ। আর না। এরা বিশ্বের জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে। সবচেয়ে খারাপ কাজ করেছে, একজন মুক্তিযোদ্ধা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে। পরে ডিবি অফিসে নাটক সাজিয়েছে। ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করেছে-যা খুবই বড় প্রতারণা। বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আর আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে (গত শনিবার) যে নাটক হয়েছে সেই নাটকে ওনারা ছোট হননি ছোট হয়েছো তোমরা।
সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষক ভাড়া করে এনেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘ওই ভাড়া করা লোকেরা বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন নেই। বাহ, তুমি কে ভাই এসব কথা বলার? তুমি ভাড়া করা। যেই ফোরামের হয়ে তারা এসেছে সেই ফোরাম এবং এটার প্রতিষ্ঠাতা যে আবেদ তাকেও দেশের মানুষ কেউ চেনে না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ক্রিকেটের গুগলির মতো সরকার বিএনপির গুগলিতে বোল্ড আউট হয়ে গেছে। লাখ লাখ মানুষ রোদবৃষ্টি উপেক্ষা করে সরকারকে একটি ম্যাসেজ দিয়েছে, তা হলো তোমরা অবিলম্বে গদি ছাড়ো। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন, সবাইকে মুক্তি দিন ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, গ্রেফতার করছেন ভালো কথা। আরো করেন। কিন্তু আন্দোলন কি থামতে পারবেন? এদেশের সিনিয়র সিটিজেনশিপ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তাই ফেলে পেটালেন, আবার আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গেলেন, নাটকও করে ছেড়ে দিলেন। এদেশের মানুষ এই সরকারের পতন কামনা করে। আমাদের একটাই দাবি আপনাদের পদত্যাগ। এছাড়া আমরা অন্য কিছু চাই না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, এ সরকার ১৮ কোটি মানুষের টুটি চেপে ধরেছে। যার জন্য ৫২ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ করছিল এদেশের মানুষ। বর্তমান সরকার লগি বৈঠার সরকার। এরা মানুষের ওপর জুলুম করে শেষ করে দিয়েছে। যা গত ২৯জুলাই তারা দেখিয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর কিভাবে জুলুম হয়েছে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমান উল্লাহ আমানকে নাকি পুলিশ মানবিকতা দেখিয়েছে। পেপারে ও টিভিতে খবর হয়েছে। এগুলো নাটক করেছে সরকার। নাটক না হলে তারা কেন মিডিয়া দেবে এগুলো। শুধু কেন এই দুই নেতার সেবা-খাবার দিতে হয়। আরো তো অনেক নেতা গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদেরকে তো ছেড়ে দেয়নি। খোঁজ নেয়নি প্রধানমন্ত্রী। এসব নাটক করে পার পাওয়া যাবে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিজয়ী হয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়াও বিজয়ী হয়েছিলেন। এবার আমরাও বিজয়ী হবো।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে। এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আর নেতা তারেক রহমান।
সাবেক ডাকসু ভিপি,সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ঢাকা উওরের বিএনপির আহবায়ক আমানউল্লাহআমান বলেন, রাজধানীর গাবতলীতে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে সেখান থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।আমি অসুস্হ হয়ে পরলে পরে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে পুলিশ। আহত অবস্থায় হাসপাতালে থাকার সময় ওষুধ দিয়ে আমাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। এমন সময় কে বা কারা তাকে দেখতে এসেছিল এবং ফলের ঝুড়ি দিয়ে গেছে তা তিনি বুঝতে পারেননি।চলমান আন্দোলনে তার ভূমিকার পিঠে ছুরি মারার জন্য, নেতকর্মীদের বিভ্রান্ত করার জন্য এই নাটক সাজানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জনসমাবেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নেতা ডা. এজেডএম জাহিদহোসেন, বরকতউল্লাহ বুলু, অ্যাডভোকেট রুহুলকবিররিজভী,আবুলখায়েরভূঁইয়া,খায়রুলকবিরখোকন,এ্যাডভোকেট জয়নুলআবেদীন ফারুক, অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।