সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে দেশটিতে থাকা অনেক বাংলাদেশি দেশে ফিরতে রাজি নন। এখন পর্যন্ত দেশটি থেকে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ফেরানোর কাজ চলছে। সুদান থেকে ৬০০ থেকে ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফিরতে আগ্রহ দেখিয়েছে। এটা কিন্তু চূড়ান্ত নয়। চূড়ান্ত সংখ্যাটা বোঝা যাবে আরও পরে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন সুদান থেকে যারা ফিরতে চাইবে তাদের দেশে ফেরাতে। কিন্তু দেশে ফিরে আসতে রাজি হচ্ছে না অনেকে। তাদের ফেরানোর জন্য বাস ভাড়া থেকে শুরু করে বিশেষ ফ্লাইট– সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের ফেরানোর বিষয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে সংশ্লিষ্টরা বাংলাদেশিদের ফেরাতে সবার প্রস্তুতি ও সহযোগিতার কথা জানান।
সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফিরতে অনাগ্রহ নিয়ে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, সুদান থেকে ফিরতে না চাওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই মূলত দেশটিতে গেছেন সুযোগ বুঝে ইউরোপের কোনো দেশে পাড়ি জমানোর আশায়। সুদানের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কোনো সুযোগ পেলে কারও কারও চেষ্টা থাকবে ইউরোপের কোনো দেশে ঢুকে পড়ার।
দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে ফিরতে চাওয়া বাংলাদেশিদের পোর্ট সুদান হয়ে জাহাজে করে জেদ্দায় নেওয়া হবে। সেখান থেকে বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরানো হবে।
খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) তারেক আহমেদের দেওয়া তথ্য বলছে, সুদানে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের মধ্যে খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। বাকিরা দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান করছেন।
সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের শুরুর দিকে গত ১৫ এপ্রিল দেশটির রাজধানী খার্তুমে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদের বাসা আক্রান্ত হয়। রাষ্ট্রদূতের বাসার দেয়াল ও জানালা ভেদ করে ঢুকে পড়ে মেশিনগানের গুলি। এরপর গত ২২ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের সময় বাংলাদেশ দূতাবাসের জানালা ও দেয়াল ভেদ করে মেশিনগানের গুলি ঢুকে পড়ে।
সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা-সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ে এ পর্যন্ত চার শতাধিক লোকের প্রাণহানির কথা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।