সুমন কুমার বুলেট নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মহাদেবপুরের স্বরুপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমি না দিয়েও ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য হওয়ার দাবী করে বিএনপির এক পক্ষের নেতা শাহাজান গংয়ের মারপিটে আহত হয়েছেন রাজু আহমেদ জুয়েল, সাজু, হাবিব ও উৎসব নামের ৪ যুবক। নেক্কার জনক এই ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে শাহাজানের শাস্তির দাবী করে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শাজাহান ও তার দলবল নিযে় ৫ আগষ্টের পর থেকে এলাকায় নানা ধরনের অত্যাচার অনিয়ম করে আসছে। তারা গত ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের বই দেওয়ার দিন শাহাজানকে দাওয়াত না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ২ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রাধান শিক্ষককে বিভিন্ন অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে এবং ওই বিদ্যালয়ের জমির দাতা হিসাবে নিজেকে দাবী করে। এরপর আজ ওই বিদ্যালয়ের জমির প্রকৃত দাতা আব্দুল রাজ্জাক মাস্টারের স্বজনেরা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রাধান শিক্ষককে তাদের দলিল দেখানোর সময় খবর পেয়ে শাহাজান তার দলবল (শাকিব, শামিন, আরাফাত, রহুল, সালাম) সহ লাঠিসোটা নিয়ে প্রকৃত দাতার স্বজনদের উপর অফিসের ভেতরে অতর্কিত হামলা চালায়। এবং প্রধান শিক্ষিকাকে চাকুরী থেকে বহিষ্কার করবে বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হযে় এলাকাবাসী আজ বিদ্যালয়ের মাঠে মানববন্ধন করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শাহাজান বলেন, আমি তাদের মারপিট করিনি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা। তারা আমার ভাবির কাথায় ইট মেরেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
এব্যাপারে সহকারি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শেখ মো. নাজমুল হোসেন বলেন, শাহজাহন ও রুহুল এসে আমাদের মেডামকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে ও হুমকি দিয়ে বলেন, আপনি মেয়ে মানুষ না হলে এতোক্ষনে আপনাকে পিটিয়ে সরাইতাম, আপনি মেয়ে মানুষ হয়ে বেঁচে গেলেন। এখনো সময় আছে নিজে থেকেই বদলী নিয়ে সরে পরেন না হলে আপনার চাকুরি খাব।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্চিতা রানী সরকার বলেন, শাহজাহান আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমাকে চাকুরিচুত করার হুমকি দেন। শাহজান গংয়ের হুকমিতে আমি ও অপর শিক্ষকরা সবাই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রযে়ছি।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ হারুন বলেন, ওই বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক নওগাঁ থেকে আসেন। আজ সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে ইউনিয়ন কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাজান, জামায়াতের কোষাধ্যক্ষ এবং তার আরেক ভাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা দাবী করেন। তারা বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রাধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে দাতা সদস্য হিসাবে দাবী করলে প্রধান শিক্ষক তাদের দলিল দেখাতে বলেন। এরপর আজ প্রকৃত দাতার ছেলেসহ অন্যরা গেলে অফিসের মধ্যেই তাদের মারপিট করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হাসমত আলী বলেন, এক পক্ষ অভিযোগ দিয়েছে এবং অন্য পক্ষও অভিযোগ দেওয়ার জন্য এসেছে। এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।