জেলা ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, চাঁদপুর- অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় চাঁদপুর সদরের লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম খানকে হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল সেশন জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
ওই মামলায় ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট সেলিম খানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন।
এ সময়ের মধ্যে তাঁকে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল সেশন জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করে দুদক। আজ আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সেলিম খানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির। সেলিম খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহবুব।
পরে খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া আগাম জামিন স্থগিত করে চেম্বার আদালত ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেলিম খানকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, ওই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে সেলিম খানের আবেদনের করা পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে গত ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ তাঁকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ঢাকার সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। তবে মামলার নম্বরে ভুল থাকায় তিনি নিম্ন আদালতে হাজির হলেও তাঁর আত্মসমর্পণ গ্রহণ করা হয়নি।
হাইকোর্টের আদেশে মামলার নম্বরে ১-এর পরিবর্তে ৯ উল্লেখ থাকায় বিষয়টি সংশোধনের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতি আবেদনটি নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চে পাঠান।
তবে ইতিমধ্যে তিন সপ্তাহ সময় শেষ হওয়ায় সংশোধিত আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বিবেচনায় খারিজ হয়। এরপর নতুন করে আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন সেলিম খান। এর ওপর শুনানি নিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট তাঁর ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে দুদক ১৮ সেপ্টেম্বর ওই আবেদন করে।
সেলিমের বিরুদ্ধে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ১ আগস্ট মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, সেলিম অবৈধ উপায়ে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদ তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণভাবে অর্জন করে নিজ ভোগদখলে রেখেছেন।
এ ছাড়া তিনি ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। সেলিম যে সম্পদের বিবরণী দাখিল করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করে অসংগতি পাওয়া গেছে।