সন্তান হারা মায়ের মুখে হাঁসি ফুটালেন পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা সদর মডেল থানা এসআই রাজ্জাক প্রামাণিক
এসএম রুবেল সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্ট রাজশাহী ব্যুরো
কোটের বারান্দা থাকা অবস্থায় মা’য়ের কোল থেকে দুই নাবালক শিশুকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ঘাতক বাবা। রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ জাহানাবাদ এলাকার মোসা: আদরী খাতুনের বাচ্চা দু’টিকে তার কাছ থেকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার মা’মোসা: আদরী খাতুন নিজে বাদী হয়ে রাজশাহী জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার নাবালক দুই ছেলে মেয়েকে উদ্ধার চেয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সঠিক তদন্ত আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা ইসলামপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল রাজ্জাক প্রামাণিকের কাছে।
ঘটনার বিষয়ে তদন্ত ও উদ্ধারের ভার পড়ে এই পুলিশ কর্মকর্তার নিকট মাঠে মেনে যায় সেই চরাঞ্চলের উদ্দেশ্যে তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে এ পুলিশ কর্মকর্তা,দিনরাত কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দেবিনগর ইউনিয়নের পাড়ালতলা গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে ঘাতক বাবা হেলাল উদ্দিন, জোরপূর্বক মায়ের কোল থেকে রাজশাহী কোর্টের বারান্দা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসা দুই নাবালক শিশুগুলোকে তদন্ত কর্মকর্তা ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অবশেষে ছেলে মেয়ে দুই শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
দীর্ঘ অপেক্ষার প্রহর ১১ দিনে সমাপ্ত ঘটে সন্তানদের কষ্ট মায়ের বুকে বাজে মা কাঁদেছে কতটা । মায়ের চোখে অশ্রু ঝরে মমতার অশ্রু এবং বেদনার অশ্রু। মায়ের কষ্ট কি বাজে সন্তানের বুকে? সন্তান কি কাঁদে? তার চোখে কি অশ্রু ঝরে মায়ের দুঃখে? মা কত ভালোবাসেন সন্তানকে। সন্তান যদি তা বুঝতে পেতো। মা কতটা কাঁদেছেন সন্তানের জন্য, সন্তান যদি এক ফোঁটাও কাঁদতো মায়ের জন্য! মায়ের মুখে হাসি ফুটতো। তার বুকটা আনন্দে ভরে যেতো। কিন্তু মা যতটা উদার, সন্তান ততটাই উদাসীন। মায়েরমমতা ও মাতৃবেদনা কতটা গভীর অনেক সন্তানই তা জানে না। সন্তানের গর্ভব্যথা, প্রসব ব্যথা এবং জন্মের পর আরও কতশত ব্যথা সইতে হয় মাকে,পুরুষ যদি তার কিছুটাও ভুগতো হয়ত বুঝতো কাকে বলে মাতৃমমতা এবং মাতৃযাতনা। এ-সবের ঘটনা এদেশে অহরহ ঘটে যাচ্ছে,নিরসন হচ্ছে বহু অপেক্ষার প্রহর নিয়ে।
মঙ্গলবার সকালে আল মজিদ (৫) ও মরিয়ম (২) এ দুই শিশুকে তার মা আদরী খাতুনের কোলে তুলে দিয়ে যেনো তার মায়ের নতুন জীবন ফিরিয়ে দিলো এ পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল রাজ্জাক প্রামাণিক। তার মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে পেরে যেনো এ পুলিশ কর্মকর্তাও মুখে হাসি ফুটেছে। আনন্দে ভরে উঠেছে ওই গ্রাম। জনতার মুখে পুলিশিই আস্থা যেন নতুন আবির্ভাব ঘটেছে এ-বলে,বুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরেন এই পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আব্দুল রাজ্জাককে ভুক্তভোগীসহ ঔ এলাকার গ্রামবাসীরা। দুই নাবালক শিশুগুলোকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে,চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক অপরাধ দমনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদক এসএম রুবেল। মুঠো ফোনে জানতে পুলিশ তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল রাজ্জাক বলেন, এ ঘটনা তদন্তের ভার আমার হাতে আসা মাত্রই আমার হৃদয়ে যেন নাড়া দিয়েছে, মায়ের কোলের সন্তান হারা কতটা কঠিন আমার যানা আছে বলেই, আমি পুলিশ ক্যাম্পে আর এক মিনিট দেরি না করেই আমার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযানে ছুটে যাই, উদ্ধার করি আমার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে দুই শিশুকে। তিনি আরও বলেন আমি দুই শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমি আমার দায়িত্বরত কর্তব্য থেকে ভীষণভাবে আনন্দিত।
এ বিষয়ে আরো জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম জাকারিয়া বলেন, রাজশাহী কোটের আদেশে উদ্ধারের নির্দেশনা আসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে, আমরা এই দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে তার মায়ের সাথে দেখা করিয়ে শান্ত করা হয়,যেহেতু উদ্ধার করতে কোর্টে জমা দেওয়ার সময়সীমা পার হয়ে ধাওয়াই,পুলিশের হেফাজতে রেখে পরের দিন আমরা রাজশাহী গোদাগাড়ীর কোর্টে, দুই শিশুকে সোপর্দ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।